গাবতলী গরুর হাট ইজারা প্রদানে বড় ধরনের অনিয়ম,ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় রাজস্বের ক্ষতিসাধনের সুনিদিষ্ট অভিযোগে রাজধানীর গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর ভবনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযোগ রয়েছে, ডিএনসিসির প্রশাসকের লোকজন এবার কৌশলে খাস কালেকশনের নামে গাবতলী পশুরহাট থেকে নিজেরা ইচ্ছা মাফিক লুটপাটের সুযোগ নিতেন। তাদের এই অপকর্মের ফলে প্রতিদিন সরকার ৩০-৩৫ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখিন হতো। তবে দুদকের এই অভিযানের কারণে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে এবং প্রতিষ্ঠানটি লুটপাটকারীদের কবল থেকে রক্ষা পেতে যাচ্ছ।
আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হাসানের নেতৃত্ব এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যরা ডিএনসিসির নগর ভবনে এই অভিযান চালায়। অভিযানকালে দুদকের কর্মকর্তারা ডিএনসিসির প্রশাসক ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যদের বক্তব্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে গাবতলী গরুর হাট ইজারা প্রদানে দরপত্র সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করেন।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন, দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপ পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম। তিনি জানান, দুদক টিমের সদস্যরা প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই অভিযান চালিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০২৫ সালের হাট ইজারায় সর্বোচ্চ দর ছিল প্রায় ২২ কোটি ২৫ লাখ টাকা । তবে সরকার নির্ধারিত দর ছিল ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আর সবোর্চ্চ দর উঠেছে ২২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ নির্ধারিত দরের চেয়ে অনেক বেশি।
ডিএনসিসির গাবতলীর পশুর হাট মূল্যায়ন কমিটি সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেওয়ার সুপারিশ করেছেন। কিন্তু প্রশাসকের নির্দেশনায় ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ বাতিল করে খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়। তারাএর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন 'সিপিটিইউ ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। এই অযুহাতে দরপত্র বাতিল করা হয়। তবে হাট ইজারা সরকারি ক্রয় নীতিমালার আওতায় পড়ে না । এ ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও নেই। আজকের অভিযানকালে দুদক টিম বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করেছেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরো জানান, অভিযানকালে প্রাথমিক পর্যালোচনায় অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাবতলী গরুর হাট ইজারা না দিয়ে বড় অঙ্কের সরকারি রাজস্ব আয় হাত ছাড়া হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, মর্মে এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক প্রাথমিক সত্যতা প্রাপ্তির প্রেক্ষিতে এ অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে অভিযান পরিচালনাকারী টিম।
সূত্র মতে, রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুরহাট গাবতলী। এই হাটের নগদ টাকার লোভ সামলাতে না পেরেই ডিএনসিসির বর্তমান প্রশাসন এই জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর প্রক্রিয়াগত ভুল দেখিয়ে ইজারা বাতিল করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। নিজেরা হাটের খাজনা আদায়সহ সব দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসক মো. ইজাজ। অভিযোগ একশ্রেণির কর্মকর্তাদের অবৈধ সুবিধা দিতে ২২ কোটি ২৫ লাখ টাকা কাজ পাওয়া ইজারাদার আরাত মটরের টেন্ডার বাতিল করা হয়। অথচ নিজেদের পরিচালনা করার কথা থাকলেও তৃতীয় দরদাতা এক ইজারাদার দিয়ে হাট পরিচালনা করা হচ্ছে।
আ. দৈ./কাশেম