ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক সমস্যা রয়েছে। বর্তমান সময়ে জনশক্তিকে জনসম্পদে রুপান্তর করা হচ্ছে। বাংলাদেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণই বেশি। এটা ৬০ শতাংশেরও বেশি। এই জনশক্তি গুলো তৈরি হচ্ছে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই জনশক্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামকে পরিচ্ছন্ন করে দক্ষতাসম্পন্ন মানব সম্পদে রুপান্তরের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে এটা উপস্থাপন করবে। এটা আমাদের লক্ষ্য বা ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে আমরা মনে করি। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এমন বক্তব্য রাখেন।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে তাদের দক্ষতা বা সামগ্রিকভাবে তাদের নিয়ে চিন্তা ভাবনা ক্ষেত্রে আমরা উদাসীনতা লক্ষ্য করতে পারি। এই ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা যদি অ্যাকাডিমিক্যালি কিভাবে ঘুরে দাড়াতে হবে, শিক্ষার্থীরা কিভাবে উন্নয়ন করতে পারে, কিভাবে দক্ষতা উন্নয়ন করবে, এ বিষয়গুলো সাংবাদিকরা যদি মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরলে এ জাতির বড় ধরনের উপকার হবে। এর পূর্বে আমরা দেখেছি ক্যাম্পাসগুলো মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। মাদক যুবশ্রেণী জন্য সমস্যা আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। এই সমস্যাগুলো সংবাদপত্রের মাধ্যমে তুলে ধরলে সুন্দর ক্যাম্পাস বিনির্মাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের করিডোরে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিবির সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নীতিমালা প্রণয়ন করে ছাত্রদের নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে গঠিত ছাত্র সংসদ সুসংগঠিত হয়ে ছাত্রদের অধিকার সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করলে তা একটি ক্যাম্পাসের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় এবং এর ফলে জাতীয় রাজনীতিতে এই ক্যাম্পাস থেকে অনেক বড় বড় নেতৃত্ব উঠে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সুতরাং আমি প্রশাসনের কাছে আমি আহ্বান জানাই, অতিদ্রুত ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ এবং নীতিমালা প্রণয়ন করে তারা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আরও বলেন, প্রশাসন যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে এবং নীতিমালা প্রণয়ন করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বিপ্লব পরবর্তী সময়ে আবাসিক হলে অবস্থান করার প্রশ্নে শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতিও হলে থাকে না। আমরা তাকে বলেছি আপনার যদি লিগ্যালি সীট না থাকে তাহলে মেসে থাকতে হবে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতিকেই আমরা এলাউ করিনি সেহেতু অন্য কোনো জনশক্তি জোর করে হলে রাখার তো কোনো প্রশ্নই আসেনা।
একই প্রশ্নে ইবি শাখা শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, হলে অবস্থান করছে আন্দোলনকারীরা। এখানে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ভাইয়েরা ছিলেন, ছাত্রদলের ভাইয়েরা ছিলেন, আরও অনেকেই ছিলেন। নিজস্ব ব্যানারে কেউ হলে উঠেনি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হল থেকে বের করে শিক্ষার্থীরা সেখান অবস্থান করছে। আমাদের জায়গা থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি যে, যদি আমাদের কেউ থেকেও থাকে হলে আমরা তাকে সেখান থেকে বের করে আনবো। তবে আপনারা আমাদেরকে নিশ্চয়তা দেন যে মেধার ভিত্তিতে হলের সীট বন্টন হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত সেরকম কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করলেও পারে নাই বলেই আমার মনে হয়। যদি কেউ দায়িত্ব নিয়ে এটা করতে পারে আমরা সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হবো।
ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বৈরীতার ব্যাপারে শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, আমাদের জনশক্তিদের প্রতি আমাদের নির্দেশনা হলো কাঁদা ছোড়াছুড়ির ব্যাপারে নিজেকে নিবৃত রাখা। আমরা সবসময় চেষ্টা করি যেন সহনশীল অবস্থা বিরাজ করে। পূর্বে মারামারি কাটাকাটি এগুলো ছিল নিত্য-নৈমিত্যিক ব্যাপার। কিন্তু ৫ আগস্টের পর দেখেছি অনলাইনে যাই হোক বাস্তবে ক্যাম্পাসে খুব বেশি কিছু হয় নাই। আমরা যথেষ্ট সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে সবার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছি।
সাংবাদিকদের সংবাদ পরিবেশনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিবির সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, সরকারকে অনুরোধ জানাবো, সাংবাদিক পেশাকে সচ্ছ করার জন্য। এটা জেনো কোনো মতে হলুদ সাংবাদিকতায় পরিণত না হয়। এজন্য তাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আর একটু বেশি চিন্তা করতে হবে। আমরা বলি, আমাদের ত্রুটিগুলো দেখেন, তুলে ধরেন, আমরা সংশোধিত হতে পারবো। যদি আমাদের বিরুদ্ধে কোন অকারেন্স না পান, কারও প্রপাগান্ডায় প্রভাবিত না হয়ে আমাদের উপর ইনজাস্টিস করবেন না। তথ্য জাস্টিফাই না করে সংবাদ প্রচার করে আমাদের উপর অবিচার করবে না।
আ. দৈ./ কাশেম