বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আপনারা বলছেন, বিএনপি তড়িঘড়ি করে নির্বাচন চাচ্ছে। সংস্কার একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার। যে দল নির্বাচিত হবে, সে দল বাকী সংস্কার করবে। নির্বাচন ছাড়া দেশ আর কতদিন চলবে। ৮ মাস তো হয়ে গেছে, আপনারা বলেছেন ডিসেম্বরে নির্বাচন। তাহলে সংস্কার করতে আর কত সময় লাগবে আপনাদের।’
আজ শনিবার দুপুরে জিয়া পরিষদের আয়োজনে নাটোর জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব আত্মপরিচয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব শিখিয়েছেন শহীদ জিয়াউর রহমান। এরপর থেকে খালেদা জিয়া এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একইভাবে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করছে। বিএনপি জনসম্পৃক্ত দল, জনগণের পক্ষের দল। এ দল নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র চলে না। যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তারা আজ কোথায়।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ’সরকারের কিছু উপদেষ্টা সংস্কার নিয়ে কথা বলছে। সংসদে বসে বসে সংস্কার করে তা সংশোধন করা হয়েছে। তাহলে কেন এত সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে।’
দেশের মানুষ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ হাসিনার পতন দেখতে চেয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার অবাধ সুষ্ঠু একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে তা দেখতে চেয়েছে। দেরি হলে দেশের মানুষ হতাশায় ভুগবে।’
ভারতকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে যারা বিশ্বাস করে না, তারা ভাবে এ দেশ তাবেদার রাষ্ট্র থাকবে, ভারতের পক্ষে থাকবে। যার ফলে তারা বেছে রেখেছিল তাদের আনুগত্য কে করবে। সেই কারণে একটি দুনিয়া কাপানো ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। তাদের দেশেই ফ্যাসিবাদ পালিয়েছে। এখন তারা বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে, দেশ নাকি ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশ নাকি আর নেই।’
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গুম, খুনের এক সংস্কৃতি চালু করছিল। তার সিংহাসনকে ধরে রাখতে পুরো দেশে রক্তের বন্যা বয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশে তার ক্ষমতা ছড়িয়ে রাখতে একটি রক্তময় দেশ বানিয়েছিল। ভারত তাকে টিকিয়ে রাখতে প্রশ্রয় দিয়েছে এবং তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে তাদের হাতে রাখতে। তাদের হুকুমে বাংলাদেশ চলবে এমন নীতিতে তারা ছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন তাদের মায়াকান্না। কারণ হাসিনা বলেছিল; আমি ভারতকে যা দিয়েছে তা সারা জীবন মনে রাখবে। সে কথা দেশের মানুষ আজ বুঝেছে। যার জন্য পালিয়ে যাওয়া হাসিনাকে তারা সব ধরনের সহযোগিতা করছে। দেশের টাকা পাচার করলো, দেশের মানুষকে খুন করলো, তার জন্য এত মায়াকান্না কেন।’
জিয়া পরিষদ নিয়ে রিজভী বলেন, ‘সুশীল সমাজ হচ্ছে জিয়া পরিষদ। সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সমন্বয়ে নাটোরের এ জিয়া পরিষদ। গ্রামে গ্রামে গিয়ে সমন্বয় করে যে কমিটি গঠন করে তা প্রমাণ করে।’
সেমিনারে নাটোর জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও নাটোর জিয়া পরিষদের সভাপতি আহমুদুল হক চৌধুরি স্বপনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন এ্যাড. এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। এছাড়াও জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. এমতাজ হোসেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, জিয়া পরিষদের রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, রাজশাহী জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিপ্লব, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্যসচিব মো. আসাদুজ্জামান আসাদসহ পরিষদের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।