রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫,
১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার

রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয়
সংস্কার কমিশনের তিন প্রস্তাবে আপত্তি ইসির
শাহীন রহমান
Publish: Tuesday, 18 March, 2025, 7:01 PM  (ভিজিট : 76)

সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে এবার কমিশনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশন এর আগে সরকারের কাছে তাদের সুপারিশ প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। তবে ইসি মনে করছে কমিশনের সুপারিশে এমব প্রস্তাব রয়েছে যা নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে। ফলে এসব প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে ঐক্যমত কমিশনের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে সোমবার ইসি সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশনের দেয়ার প্রস্তাবে ক্ষমতা খর্ব হবে বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য ভিন্নমত আপত্তি জানানোর পাশাপাশি নিজেদের যুক্তি তুলে ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে চিঠি দিল সংস্থাটি।

এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের ৯-১০টি সুপারিশের বিষয়ে ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। সংস্কার কমিশনের সুপারিশে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে একটি স্বতন্ত্র কমিশন করার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, এটির প্রয়োজন নেই।

গত ফেব্রƒযারি মাসেই সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়। এখন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজৗনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের ৩৪ রাজনৈতিদক দলের কাছে সুপারিশের সারমর্ম পাঠানো হয়েছে। মতামত জানাতে সময়সীমা বেঁধে দেয় সরকার। যদিও এখন পর্যন্ত কম রাজৗনৈতিক দলগুলোই সুপারিশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছে। সরকার  বলছে মতামত দেয়ার পরই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে বৈঠক শুরু হবে। যািদও এর আগে এক দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক দল সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে একমত হতে পারেনি। বিশেষ করে বিএনপি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দাবী জানিয়েছে। অন্য দলগুলোর সংস্কার শেষ করেই নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে।

এদিকে নির্বাচন সংস্কার নিয়ে গঠিত সংস্কার কমিশনও তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে এই কমিশনের কিছু সংস্কার প্রস্তাবের বিলোধীতা নির্বাচন কমিশন আগ থেকেই করে আসছে।  গত জানুয়ারি মাঠে নির্বাচন ভবনের এক অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন কয়েকটি সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে আপত্তি তোলেন। বলেন, বিদায় নেয়ার পর ইসির বিষয়ে তদন্তভার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির হাতে দিলে এবং সীমানা পুননির্ধারণ ও ভোটার তালিকা নিয়ে স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ করার সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে তা ইসির স্বাধীনতা ‘খর্ব করবে। সোমবার ঐক্যমত কমিশনের কাঠে ইসির পাঠানো চিঠিতে একই বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে।
 
বদিউল আলম মজুমদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গত ১৫ জানুয়ারি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়। এতে ১৫০টি সুপারিশ সম্বলিত প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করেছে।
এর মধ্যে একটি সুপারিশে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এবং শপথ ভঙ করলে মেয়াদ পরবর্তী সময়ে উত্থাপিত অভিযোগ প্রস্তাবিত সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর বিধান করতে হবে। ভবিষ্যতে সীমানা নির্ধারণে আলাদা স্বাধীন সীমানা নির্ধারণ কর্তৃপক্ষ গঠন করা এবং জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংস্থা নামে একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গঠন করার কথা বলা হয়েছে অন্য দুই সুপারিশে।

নির্বাচন কমিশনার যদি ব্যর্থ হন বা শপথ ভঙ্গ হয়, তাহলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে তদন্তের সুপারিশ নিয়েও তীব্র আপত্তি নির্বাচন কমিশনের। সিইসি নাসির উদ্দিন মনে করেন ‘মেয়াদের পরে আমি যখন থাকব না, পাঁচ বছর পরে আমার পেছনে পার্লামেন্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির লোকজন তদন্ত করে প্রেসিডেন্টের কাছে সুারিশ দেবে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। তিনি বলেন, যখন আপনি থাকবেন না সরকারি চাকরিতে, তখন দেশের বিভিন্ন আইনে বিচারের আইন আছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অতীতে দেখা গেছে, বিভিন্ন রাষ্ট্রপতি ইমিউনিটি ভোগ করতেন চেয়ারে থাকার সময়, যখন চেয়ারে নেই অনেক রাষ্ট্রপতিরও বিচার হয়েছে তো।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যেমনভাবে পার্লামেন্টারি ইলেকশন হবে, কেয়ার গর্ভমেন্ট না থাকলেও লোকাল গভার্নমেন্ট ইলেকশনটাও কোয়ালিটি ইলেকশন হবে যদি ইসির স্বাধীনতা অক্ষুন্ন থাকে। সুন্দর ইলেকশন হবে।‘কিন্তু পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির হেফাজতে দিয়ে দিলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে; এটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য না।

সিইসি বলেন, “বিদমান আইনে হয়েছে, নতুন আইন করা লাগেনি। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমরাও আইনের ঊর্ধ্বে নই। যখন আমরা থাকব না, বিচার করার জন্য যথেষ্ট আইন আছে। এখন পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটিকে যদি এ দায়িত্ব দেয়া হয়! এখন ধরেন স্থানীয় নির্বাচনে কোনো সংসদ সদস্য, পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটি আমাকে অনুরোধ করল ভোটকেন্দ্র বাড়ির পাশে আনেন, আমি মানলাম না। উনি বলবেন, আচ্ছা দাঁড়াও চার বছর যাক, পার হোক, তখন দেখা যাবে। এটা হবে।

পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে গেলে আমাদের স্বাধীনতা খর্ব হবে, স্বাধীনতা কম্প্রমাইজড হবে। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব না। ইসির জনবল, বাজেট ইত্যাদির দায়িত্বও সংসদীয় কমিটির হাতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন, যা নিয়ে আপত্তি আছেন সিইসির।

তিনি বলেন,‘দিজ ইজ নট দি প্রপার ফোরাম। এটা ওভারসাইট বডি। অর্থ মন্ত্রণালয়কে বাদ দিয়ে বাজেট করতে পারবেন? পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির ওপর আমরা নির্ভরশীল হতে চাই না; আমাদের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখার জন্যে এ জিনিসটা বাদ দিতে হবে। ইসির অধীনে একটা স্বতন্ত্র সচিবালয় রয়েছে। সিইসি ও চারজন কমিশনার যদি সারাদিন ট্রান্সফার, পোস্টিং, প্রমোশন, রিক্রুটমেন্ট এগুলো করতে যান, আসল কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সিইসির মতে, সংস্কার কমিশন বিষয়গুলো ‘যৌথভাবে’ করার কথা বললেও তাতে ইসির ‘আসল কাজ’ বিঘ্নিত হবে। নতুন ইসি গঠনে বিদ্যমান আইন সংস্কার করে ‘সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনের খসড়া’ প্রস্তাব নিয়েও সমালোচনা করেন সিইসি।
যা আছে ইসির চিঠিতে: সোমবার ঐক্যমত কমিশনের কারেঠ পাঠানোর ইসির চিঠির বিষয়ে সচিব সাংবাদিকদের বলেন, সংস্কার কমিশন সীমানার পুনর্নিধারণ কমিশনের কথা বলেছে, আমরা বলেছি যে দরকার নাই। কেবিনেটে আমাদের একটা প্রস্তাব দেয়া আছে। সেটাই সাফিসিয়েন্ট। আমরা বলেছি গ্রাম শূন্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছেন, শহরে আসছেন। এজন্য শহরমুখী হয়ে যাচ্ছে আসন সংখ্যা। এটা না করে ভোটার, জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান, আঞ্চলিক অখণ্ডতা বিবেচনা করা উচিত। এছাড়া সংস্কার কমিশন ভোটের ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে সার্টিফাই করার কথাও বলেছে। আমরা মনে করি এটার দরকার নাই। নির্বাচন সম্পর্কে রিটার্নিং অফিসার সন্তুষ্ট না হয়ে তো ফলাফল দিচ্ছেন না। এটা গেজেট হচ্ছে, এটাই সার্টিফিকেশন। এমন কোনো ম্যাকানিজম কী আছে, যে আমরা সার্টিফিকেশন দেব, কী করবো? ম্যাকানিজম কী হবে, সেটা তো আবার আরেকটা দিকে যাবে।

সংস্কার কমিশন এনআইডির জন্য পৃথক অথরিটির কথা বলেছে। ইসি সচিব বলেন, এনআইডি কার্ডের বিষয়ে আমাদের অভিমত, সেটা হচ্ছে এনআইডি আমাদের এখানে থাকা বাঞ্ছনীয়। কেন না, ২০০৭ সাল থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা এবং স্কিলড করা হয়েছে। তাহলে এটা কেন নেওয়া হবে? বরং এটাকে আরও শক্তিশালী করা যায় কীভাবে, কলেবরটা কী করে বহুমুখী করা যায়, সেটা করতে হবে। আমরা এখন ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানকে সেবা দিচ্ছি, সার্ভিসের উপযোগিতা আছে বলেই তো দেওয়া হচ্ছে।

ইসির দায়বদ্ধতা ও কমিশনের শাস্তির বিষয়ে সংস্কার কমিশন অবসরের পাঁচ বছর পর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ইসির শাস্তি ব্যবস্থা তো আছেই। শর্ত ভঙ্গ করলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বা অন্যান্য আইন আছে। এটা পরিবর্তন করা কতটুকু বাস্তবসম্মত। অ্যাকাডেমিক সাইডে বিষয়টা যদি বলি-চাকরি শেষ হওয়ার পাঁচ বছর পর আপনি বললেন আপনি ওই নির্বাচনে শর্ত ভঙ্গ করেছেন। 

তাহলে পাঁচ বছর পর আমাকে কোর্টে দৌড়াতে হবে ২০ বছর জেলের ঘানি টানার জন্য। এটা যৌক্তিক কিনা? আমি ইমিডিয়েট শর্ত ভঙ্গ করেছি, এটা এখনই বলেন। সংস্কার কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে, কয়টি বিষয়ে আপত্তি আছে, এই প্রশ্নের জবাবে ইস সচিব বলেন, আপত্তি বিষয়টির প্রতি আমার আপত্তি আছে। আপত্তি না, আমরা বলেছি আমাদের মতামত। আপত্তি বিষয়টা হলো জোরালো এবং বিষয়টাই ডিফারেন্ট। ইসি ভিন্নমত পোষণ করেছে। নয় কি দশটা হবে। ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রিয়াজকে চিঠি দিয়েছি। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, চিঠিতে মতামত দেয়ার কারণই হচ্ছে ইসির ক্ষমতা খর্ব হওয়ার জন্য। খর্ব না হলে তো পাঠাতাম না। কমিশনের ভিন্নমত প্রকাশ করার সুযোগ আছে সেখানে মতামত দিয়েছে।

‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কতিপয় সুপারিশের বিপরীতে নির্বাচন কমিশনের মতামত বা অভিমত প্রেরণ’ শিরোনামে চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এবং লেজিসলেটিভ সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবের কাছেও পাঠিয়েছে ইসি। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনও আপত্তি জানিয়ে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।

আ.দৈ/আরএস 







   বিষয়:  সংস্কার   কমিশনের   তিন   প্রস্তাবে   আপত্তি   ইসির  
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নারী নির্যাতন বন্ধে আইনের সংশোধন প্রয়োজন: মামুনুল হক
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
ভারত-পাকিস্তান সংকট নিরসনের চেষ্টা করছে সৌদি আরব
পাঁচ বছর আগে অপহরণ হওয়া স্কুলছাত্র নিজেই ফিরল বাসায়
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিএনসিসিতে বর্জ্যব্যবস্থাপানা বিভাগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান
কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ভিডিও প্রকাশ
পদত্যাগ করলেন আটাবের সবুজ মুন্সী
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের সভা
ঢাকা দুই সিটিতে আওয়ামী দোসর ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় বিএনপির ব্যাপক তদবির
জাতীয়- এর আরো খবর
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝