কবি, দার্শনিক ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘আমাদের কথা শোনা যখন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে, তখন থেকে বিএনপির পতন শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, আজ হোক কাল হোক, তারা হারিয়ে যাবে।’
আজ শনিবার দুপুরে যশোর শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে তরুণদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ফরহাদ মজহার এ মন্তব্য করেন। তবে তিনি বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থান কখনও সফল হতো না, যদি খালেদা জিয়া আপসহীনভাবে সরকারের বিরুদ্ধে না থাকতেন।’
ফরহাদ মজহার বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের সংবিধান ছিল না। এটা ছিল পাকিস্তানের সংবিধান। এটা করা হয়েছিল দিল্লির হাতে বাংলাদেশকে তুলে দেওয়ার জন্য।
বর্তমান সরকারকে নির্বাচিত সরকার দাবি করে মজহার বলেন, ড. ইউনূসকে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসানো হয়েছে। রক্ত দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাহলে ভোট গুরুত্বপূর্ণ নাকি রক্ত গুরুত্বপূর্ণ?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান পাকিস্তানের সংবিধান। একাত্তরে আমরা বিপ্লব করিনি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি। একাত্তরপরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান জন–অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করেননি। তা ছাড়া গণপরিষদ ভোট হয়নি। ফলে রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হয়নি। অথচ রাষ্ট্র গঠনে গণপরিষদ ভোট স্বীকৃত পদ্ধতি। ফলে ৭২ সালের সংবিধান কখনো বাংলাদেশের জনগণের সংবিধান ছিল না। সেটা ছিল পাকিস্তানের সংবিধান। কারণ, সেটা যাঁরা প্রণয়ন করেছেন, তাঁরা পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁরা যুদ্ধের সময় ছিলেন না। যে কয়েকজন ছিলেন, তাঁরা দিল্লির সঙ্গে সহযোগিতা করে বাংলাদেশকে দিল্লির হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন।’
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সংস্কার বলে কিছু নেই। সংবিধান আমরা তো বানাইতে পারি নাই। আমরা যদি দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলি, তাহলে এ পর্বে আমরা রাষ্ট্র গঠন করতে না পারলে আবারও ৫০ বছর পিছিয়ে যেতে হবে। ফলে ছাত্রদের রাষ্ট্র গঠনে গণপরিষদ ভোটের দাবি সঠিক। কিন্তু তারা এটা ব্যাখা করতে পারে না।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাচ্যসংঘ যশোরের প্রতিষ্ঠাতা লেখক, গবেষক বেনজীন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ, মোহাম্মাদ রোমেল, যশোর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফাহিম আল ফাত্তাহ, মারুফ কবীর, যশোর নগারিক কমিটির নেতা আশালতা প্রমুখ।
আ.দৈ/আরএস