ছাত্র জনতার গণআন্দোলতে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু ওই ফ্যাসিস্ট সরকারের মাফিয়াডন হিসাবে খ্যাত বাংলাদেশ রেল খাতের অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাগিয়ে নেওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের দাপট কমেনি। অবশেষে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে ধরার জন্য এবং তারা অবস্থানের খোঁজে রেল ভবনে অভিযানে পরিচালনা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (১২ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ, স্বপন কুমার রায়, উপ-সহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমি ও আনিসুর রহমান রাসেলের সমন্বয়ে টিম এনফোর্সমেন্ট রেল ভবনে অভিযান পরিচালনা করছেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকে অভিযোগ রয়েছে,আওয়ামী লীগের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও মির্জা আজমের সহায়তায় রাতারাতি বদলে যায় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। তাদের আশীর্বাদ নিয়ে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে রেলের নির্মাণ খাতে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাগিয়ে নিয়েছে অখ্যাত এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রকল্পের বরাদ্দের একটা বড় অংশ লুটপাট হয়েছে সিন্ডিকেট করে।
রেল প্রকল্পের টেন্ডার ডন খ্যাত ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড খোঁজ মিলেছে তাদের নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির চিত্র। শেখ হাসিনা সরকারের নির্মাণ খাতের মাফিয়া খ্যাত দুই প্রভাবশালী নেতার সরাসরি হস্তক্ষেপে রেলের একের পর এক বড় বড় প্রকল্পের কাজ পেতে থাকে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। এই দুই নেতার প্রভাব খাটিয়ে রেলের সব প্রকল্প একাই গিলে খেয়েছে গ্রুপটি। শুধু রেল নয়, গত ১৫ বছরে উন্নয়ন খাতের অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকার কাজ করেছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। যা দেশের উন্নয়ন খাতের এক নজিরবিহীন ইতিহাস।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরে এখনো রেল সিন্ডিকেট ধরে রেখেছে রেলের কালো বিড়াল খ্যাত ম্যাক্স গ্রুপ। চিনকি আস্তানার পরে কাশিয়ানি-গোপালগঞ্জ রেল প্রকল্পের একাধিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ পায় ম্যাক্স। বর্তমানে রেলের চলমান আরও বড় দুটি প্রকল্পেও কাজ করছে এই গ্রুপটি।
এখন প্রশ্ন থেকে যায়, কীভাবে পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২০৯ কোটি টাকার চিনকি আস্তানা ক্ষয়প্রাপ্ত রেল প্রকল্প, ২০১১ সালে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার লাকসাম-চিনকি আস্তানা রেল প্রকল্প, ২০১৫ সালে ৬ হাজার কোটি টাকার আখাউড়া লাকসাম রেলপথ প্রকল্প, ২০১৬ সালে ১৮ হাজার কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পেলো ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। ৪ নম্বর গ্রেডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হয়েও তারা কীভাবে রেলের এতবড় সব প্রকল্প বাগিয়ে নিলো?
আ. দৈ./ কাশেম