রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫,
১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার

রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয়
ঈদ কেনাকাটা
জমে উঠেছে চাঁদনি চক-গাউছিয়া
Publish: Sunday, 9 March, 2025, 6:52 PM  (ভিজিট : 98)

ঈদের বাকি এখোনো তিন সপ্তাহেরও বেশি। তবে  ইতোমধ্যে ঢাকার মার্কেটগুলোতে শুরু হয়েছে ঈদ কেনাকাটা। গাউছিয়া, চাঁদনি চক মার্কেটগুলোতে  শুরু হয়ে গেছে ক্রেতাদের ভীড়। তবে এখোনো জমেনি নিউমার্কেটের ঈদ কেনাকাটা। কোনো কোনো মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড়ে ব্যবসায়ীদের দম ফেলার ফুরসত না থাকলেও ভিন্ন চিত্র নিউমার্কেটে। সেখানে ক্রেতা না থাকায় অনেকটা মুখ ভার ব্যবসায়ীদের। তবে কয়েকদিন পর বেচাকেনা জমে উঠবে বলে আশা করছেন নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা।

গত শুক্রবার ছিলো রমজান শুরুর পর প্রথম ছুটির দিন । সেদিন ও গতকাল শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, নুরজাহান সুপার মার্কেট, চাঁদনী চক ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদনি চক-গাউছিয়া মার্কেটগুলোতে ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করছে। বিক্রেতাদেরও নেই দম ফেলার সময়। কেউ ক্রেতা ডাকছে , কেউবা ব্যাস্ত ক্রেতাদের জামাকাপড় দেখাতে। থান কাপড় এবং গাউছিয়া মার্কেটের দোতলায় দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। থরে থরে সাজানো থান কাপড় থেকে পছন্দসই রং ও মাপ অনুযায়ী কাপড় কিনছেন ক্রেতারা। আর রেডিমেড কাপড়ের দোকানগুলোও কানায় কানায় পূর্ণ।

 নিউমার্কেটে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই। মাঝেমধ্যে ক্রেতা দেখলে তাদের ডাকছেন দোকানের কর্মীরা। দোকানিরা অলস সময় পার করছেন। কেউ কেউ গিয়ে পণ্য কিনলেও অনেকে ঘুরে দেখছেন। সবমিলিয়ে নিউমার্কেটে তেমনটা জমেনি ঈদ কেনাকাটা। এমন ক্রেতা দেখে সন্তুষ্ট নন বিক্রেতারা।
শাপলা বিপণি বিতানের বিক্রেতা আশপাফুল ইসলাম বলেন, “শুক্রবার হিসেবে ঈদের চাপ শুরু হয়নি এখনও। তবে আজকের পর থেকে বাড়তে থাকবে। বেচাবিক্রি এখনও কম।”

ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির ম্যানেজার মো. ফিরোজ বলেন, “এটি ঐতিহ্যবাহী একটি মার্কেট। সাধারণত সাপ্তাহিক শুক্রবার হিসেবে যে চাপ এখনও তা আছে। ঈদের কেনাকাটার জন্য এখনও ক্রেতার চাপ পড়েনি। তবে প্রতি রমজানের প্রথম শুক্রবারই এমন কম ক্রেতা থাকে। কারণ প্রথম রমজানগুলোতে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করে অনেকে। সেজন্য কম বের হয়। তবে ঈদ যত বাড়ে কেনাকাটাও বাড়তে থাকে।”

 মেয়েকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন নাহিদা সুলতানা। তিনি বলেন,  “সন্তানের জন্য পোশাক কিনে এবার ঈদ মার্কেট শুরু করলাম। একে একে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসে পছন্দসই পোশাক কিনে দেওয়ার ইচ্ছা আছে। নিজের জন্য চাঁনরাতের আগে কিনব।”

মিরপুরের বাসিন্দা তাওহিদ আলম বলেন,ভিড় এড়াতে আগেভাগেই কেনাকাটা করতে আসলাম। ঈদের আগে ভিড় থাকে প্রচুর। সেজন্য আগেভাগেই কেনাকাটা করতে এসেছি। এছাড়া এই সময়ে দামও অনেকটা সাধ্যের মধ্যেই থাকে। তাই কেনাকাটা শুরু করলাম আগেভাগেই।”

এদিকে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদকে সামনে রেখে পোশাকে এসেছে নতুন নকশা। পরিবর্তন এসেছে পোশাকের কাটেও। দরদাম করে চলে যাওয়া ক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় বিক্রেতারা কিছুটা হতাশ হলেও ক্রেতার বাড়তি চাপ উপভোগ করেছেন। তাদের আশা দু-একদিনের মধ্যে ক্রেতা বাড়বে। নিউমার্কেটের আলফা বুটিক হাউজের মালিক ইকবাল বলেন, “নিউ কালেকশন দেখতেই বেশিরভাগ ক্রেতা দোকানে ঢুকছেন। কিছুটা কম দামে পোশাক নিতে চাইছেন। তবুও কিছুটা বিক্রি বাড়ছে।”

প্রতিবারের মতো এবারও ভারতীয় এবং পাকিস্তানি পোশাকের আধিপত্য দেখা গেছে নিউমার্কেটে। তবে বাংলাদেশি পোশাকেরও কদর আছে। নিউমার্কেটের তাহিরা ফ্যাশন হাউজের মিস তাহিরা বলেন, “মার্কেটে আগে শুধু ইন্ডিয়ার ড্রেস থাকত। এবার ইন্ডিয়ার তুলনায় পাকিস্তানি ড্রেস বেড়েছে। আর বাংলাদেশি লনের কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে। ঈদে থ্রি-পিস আইটেম বেশি কিনতে চায় কাস্টমাররা।”চাঁদনি চকের আল্লাহর দান ফেব্রিকসে ৯ বছর ধরে কাজ করছেন বিক্রেতা মো. রায়হান। তিনি বলেন, “বারিশ থান কাপড় এবং পাকিস্তানি সেহেলি কটন বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সিল্ক আর জর্জেট তো আছেই। এবার মাশশাল থ্রি-পিস ও রাংগিরি রাখী থ্রি-পিসও ভালো বিক্রি হচ্ছে।”

চাঁদনি চকে থ্রিপিস কিনতে আসা জেবিন বলেন বলেন, “কেনাকাটার জন্য চাঁদনি চকের চেয়ে ভালো কিছু হয় না। যেমন কম দামে ভালো মানের থান পাওয়া যায়, পাশাপাশি ভ্যারাইটির থ্রি-পিসও পাওয়া যায়। আর এগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে ওড়না, পুঁতি, চুমকি, পাথর ও জরি, লেস, ফিতাও পাওয়া যায়।”
থান কাপড় রোজার আগেই বিক্রি বেশি হয় বলে ক্রেতারা জানান। এর কারণ দর্জিরা রোজা শুরুর পরপরই অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেয়। রূপালি থান কাপড়ের বিক্রেতা মো. শাকিল বলেন, “রোজা বাড়লে থান কাপড়ের বিক্রি কমে যায়। কারণ দর্জিদের চাপ রোজা শুরু হলেই বাড়তে থাকে। তারা অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেয় আর ওদিকে রেডিমেড কাপড়ের বিক্রি বাড়ে।”

গাউছিয়া মার্কেটের দোতলায় তৈরি পোশাক বিক্রির ধুম দেখা গেছে। রেডিমেড লম্বা গাউন, বারবি গাউন, সারারা, গারারা, অরগাঞ্জাসহ বাহারি সমাহারের দেখা মেলে।মার্কেটজুড়েই এবারের ঈদেও মোগল আমলের পোশাক সারারা ও গারারার দাপট দেখা গেছে। হালফ্যাশনে যোগ হওয়া এই দুই পোশাক সুতি ও সিনথেটিক- দুই ধরনের কাপড়েই মেলে। ফলে ঈদে চৈত্রের খরতাপেও আরামের পাশাপাশি দেবে গর্জিয়াস লুক।

গারারা ও সারারা মধ্যে অল্পবিস্তর পার্থক্য রয়েছে। গারারায় কামিজের দৈর্ঘ্য থাকে হাঁটু পর্যন্ত। আর সালোয়ারটি হাঁটু থেকে কুঁচি শুরু হয়। অন্যদিকে সারারার কামিজ একইরকম হলেও সালোয়ার থেকে কুঁচি শুরু না হয়ে প্যান্ট বা ফার্সি কাট শুরু হয় যা দেখতে অনেকটা ঘাগরার মতো দেখায়।
ইকবাল ফ্যাশনের বিক্রেতা নিরঞ্জন সরকার বলেন, “গারারা, সারারা, শিফন, কোটা থ্রি-পিছ বেশি বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর কাপড় ভারত থেকে নিয়ে দেশে সেলাই করে বিক্রি করা হয়।”

ঈদের পোশাকে চাহিদার শীর্ষে থাকা আরও একটি পোশাক অরগাঞ্জা। এর উদ্ভব চীনে। তবে চীনের পাশাপাশি ভারতও এর বড় রপ্তানিকারক। গরমেও এর জনপ্রিয়তার কারণ এই ফেব্রিকসটি সুতি কাপড়ের মতো বায়ু শোষণের ক্ষমতা অনেক বেশি। পাশাপাশি সিল্ক থেকে তৈরি হওয়ায় অনেক হালকা এবং সহজে কুঁচকে যায় না।সারারা ও গারারাগুলোর দাম পড়বে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। গাউন ২৫০০ টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। কাপড়ের ধরণভেদে অরগাঞ্জা গজ ৪০০ থেকে শুরু। তবে ফুলেল নকশার অরগাঞ্জা কাপড়ের দাম ৬০০ টাকা। এছাড়া পুঁতি, চুমকি ও জরি কাজের অরগাঞ্জা কাপড়ের গজ পড়বে ১৫০০ টাকা। কারচুপি নেটের প্রতি গজ ৪ হাজার টাকা, বারিশ থান কাপড়ের গজ প্রতি ৩০০ টাকা, পাকিস্তানি সেহেলি কটন গজ প্রতি ৪০০ টাকা, এছাড়া মাশশাল থ্রি-পিস ১৬০০ টাকা ও রাংগিরি রাখী থ্রি-পিস ২ দুই হাজার টাকা।
এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে নিউমার্কেট এলাকায় এমন ভীড়ের কারণে রাস্তাঘাটে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। নিউমার্কেটের সামনের মিরপুর রোডে  স›ধ্যায় ইফতারের পর বেড়ে যায় যানজট। এতে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি।

আ.দৈ/আরএস
   বিষয়:  জমে   উঠেছে   চাঁদনি   চক-গাউছিয়া   
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

টঙ্গীতে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
টঙ্গীতে ঝুটের গুদামে ভয়াবহ আগুন, আধাঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে
ইউনিয়ন ব্যাংকেরও শীর্ষ খেলাপি দেশবন্ধু গ্রুপ
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির ৮৯৬তম সভা অনুষ্ঠিত
ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের সভা
ঢাকা দুই সিটিতে আওয়ামী দোসর ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় বিএনপির ব্যাপক তদবির
পদত্যাগ করলেন আটাবের সবুজ মুন্সী
রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১২ বছর , তবু মেলেনি বিচার, নিশ্চিত হয়নি ক্ষতিপূরণ
শিগগিরই ঢাকা শহরে অটোরিকশার ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে অভিযান: ডিএনসিসি প্রশাসক
জাতীয়- এর আরো খবর
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝