আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. আবুল বারকাত এবং জনতা ব্যাংকের সাবেক এমডি ও সিইও আব্দুছ সালাম আজাদসহ ২৩ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ২৯৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। কারণ দুর্নীতি দমন কমিশন দণ্ডবিধি ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তরা হলেন-সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান,অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর-২ আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান, সাবেক সহকারী পরিচালক ইসমত আরা বেগম, সাবেক পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, মো. ইমদাদুল হক, নাগিবুল ইসলাম দীপু, ড. আর এম দেবনাথ, মো. আবু নাসের, সঙ্গীতা আহমেদ ও অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র নাথ।
এ ছাড়া জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আব্দুছ ছালাম আজাদ, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক আজমুল হক, সাবেক এজিএম অজয় কুমার ঘোষ, জনতা ভবন করপোরেট শাখার সাবেক ম্যানেজার মো. গোলাম আজম, ব্যাংকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, এসইও মো. এমদাদুল হক, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুল জব্বার, সাবেক ডিএমডি মো. গোলাম ফারুক, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক, এননটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ বাদল, মেসার্স সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন ও পরিচালক মো. আবু তালহা রয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষ করা আবেদনে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও মিথ্যা রেকর্ড সৃষ্টি করে ব্যাংক কর্তৃক মর্টগেজ নেওয়া জমিতে বাস্তবে কোনও ভবন বা স্থাপনা না থাকা সত্ত্বেও ঋণগ্রহীতা মালিক হওয়ার আগেই এ জমিতে স্থাপনা দেখিয়ে মূল্যায়ন করে এবং জমি ও স্থাপনার মূল্য প্রায় ৬১০ কোটি টাকা মূল্যায়ন করে (অতি মূল্যায়ন) ঋণ অনুমোদনপূর্বক বিতরণ এবং গ্রহণের মাধ্যমে জনতা ব্যাংকের জনতা ভবন কর্পোরেট শাখার ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৬ টাকা আত্মসাতের দায়ে আব্দুছ ছালাম আজাদ, ড. আবুল বারকাত, ড. আতিউর রহমানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুদক জানতে পেরেছে, আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা পালিয়ে গেলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। তাই, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের বিদেশযাত্রা বন্ধ করা প্রয়োজন। আসামিরা যাতে তদন্ত চলাকালীন সময়ে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় আদেশ দেওয়া এবং তা কার্যকর করার জন্য পুলিশের বিশেষ শাখাকে নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।