দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তথ্য কমিশন দলীয় ক্যাডার দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। তিনি দ্রুত তথ্য কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ওই সরকারের আমলে দলীয় ক্যাডাররা নেতৃেত্ব। তবে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আর সেই অবস্থা হবে না। তিনি আমরা আশাবাদ ব্যক্ত কওে বলেন, তথ্য কমিশনে এমন ব্যক্তিদেরকে নিয়োগ দিতে হবে যাদের পেশাগত জীবনে কোন ধরনের বধনাম নেই।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে তথ্য কমিশনের কার্যকারিতা; তথ্য অধিকার আইনের সংশোধন বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এইসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, মিডিয়া রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই)-এর নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ। এসময় তথ্য অধিকার অধিকার আইনের ২৮টি ধারা সংশোধনের দাবি জানায় তথ্য অধিকার ফোরাম।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ৬ মাসের বেশি সময় ধরে তথ্য কমিশন না থাকার দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপরে বর্তায় ।তিনি বলেন, এই যে ব্যাতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে যে, একটি দেশে আইনগতভাবে যে তথ্য কমিশন থাকার কথা, সেটি ৬মাস যাবৎ নেই। কমিশন যে নেই এটি সরকারের অজানা নয়। কমিশন গঠনের দায়িত্ব যে সরকারের, সেটাও সরকারের অজানা নয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা প্রক্রিয়া পরিবর্তনে সংস্কার করছি। সেটি নির্দিষ্ট সময়ে হবে। তার আগেই যেমন বিদ্যমান আইনে দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, সেভাবেই কেন তথ্য কমিশন গঠন হলো না সেই প্রশ্নের জবাব সরকারকে দিতে হবে। অনতিবিলম্বে সেই দায়িত্বটা সরকারের পালন করা উচিত।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্য দিতে বাধ্য। এজন্য সাংবাদিকদের লড়াই করতে হবে। তারা যে তথ্য দিচ্ছে না, এটা প্রকাশিত হতে হবে। যেগুলো নির্বাচন কমিশনে (ইসি) থাকে সেগুলোর সব তথ্যই পাবলিক ইনফরমেশন। তারা এটা দিতে বাধ্য। শুধু ইসি নয়, কোথাও কোথাও হলফনামা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে আইনের পরিপন্থি। আপনারা সক্রিয় হন। তথ্য অধিকারকে কার্যকর করতে হবে।
বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, ভারতে তথ্য অধিকার বিষয়টা আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার ব্যক্তি চেয়েছে। আমাদের দেশে এটা আন্দোলনে পরিণত হয়নি। তথ্য চাওয়ার যে পরিসংখ্যান সেটা বেশি আশাব্যাঞ্জক নয়। যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো সাধারণ তথ্য, বড় বড় দুর্নীতির তথ্য নয়। আমি চেষ্টা করেছিলাম রিজার্ভ যে চুরি হয়েছিল সেটার তথ্য জানতে, কিন্তু সেই তথ্য আমাকে দেওয়া হয়নি। বলেছে এটা তদন্তাধীন। তথ্য অধিকার আইনের বাস্তবায়ন নির্ভর করে নাগরিকদের ওপর।
তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক শাহীন আনাম সাংবাদিকদের বলেন, তথ্য অধিকারের সাফল্য এর ব্যবহারের ওপর। যত বেশি ব্যবহার হবে, এই আইনটা তত বেশি সফল হবে, মানুষ জানতে পারবে। আমাদের এখানে তথ্য আইন নিয়ে একটা অনীহা আছে। সাধারণ মানুষ এটা ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছে। এটাও সবার জানা দরকার।
তিনি বর্তমান সরকারের উদ্দেশে বলেন, অবিলম্বে তথ্য কমিশন পুনর্গঠন, এটি করতে গিয়ে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে তা অনুসরণ করা ও সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তথ্য কমিশন যেন কাজ করতে পারে ও কার্যকরী হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি।
আ. দৈ./ কাশেম