প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পার হয়ে গেলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) কাটেনি শিক্ষক সংকট। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী প্রতিটি বিভাগে নির্দিষ্ট পরিমাণ শিক্ষক থাকার নীতিমালা থাকলেও নিয়োগের ক্ষেত্রে তা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউসিজি) অনুমোদন পাচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে অনুমোদন পাওয়া পদগুলোতেও নিয়োগ দেওয়া সম্পন্ন হয়নি।
অনুমোদন পাওয়া শূন্য পদের সংখ্যা রয়েছে ৫৬টি। গত বছরের ৬ মার্চ ও ২ জুন ৫২টি পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো শুরু হয়নি নিয়োগ প্রক্রিয়া। ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক সংকটের কারণে বাড়ছে সেশনজট।
জানা যায়, অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, ২৫টি বিভাগে মোট শিক্ষক থাকার কথা ৪৯৩ জন। তবে গত বছরের ২২ ডিসেম্বরের হিসাব মতে, অনুমোদন পাওয়া মোট শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ২৬৬। যার মধ্যে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ২১০। হিসেব কষে দেখা যায় চাহিদার মাত্র ৪২.৬ শতাংশ শিক্ষক বর্তমানে কর্মরত আছেন। এর মধ্যে লোকপ্রশাসন বিভাগের পাঁচজন, গণিত বিভাগের চারজন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পাঁচজন, ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের চারজন, মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের তিনজনসহ মোট ৫৪ জন উচ্চতর ডিগ্রি নিতে শিক্ষা ছুটিতে আছেন। ফলে কোনো কোনো বিভাগে চারজনের বেশি শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে আছেন। অর্থাৎ কর্মরত মোট ৪২.৬ শতাংশ শিক্ষকের মধ্যে ২৫.৭ শতাংশ শিক্ষকই শিক্ষাছুটিতে ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ৪৯ জন অধ্যাপক থাকার কথা থাকলেও, ইউজিসি থেকে ছাড়কৃত পদের সংখ্যা ১১ কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যাপক মাত্র একজন।
জানা গেছে, শিক্ষা ছুটিতে থাকা শিক্ষকদের কাছে বড় অঙ্কের টাকা পাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে গণিত বিভাগের জিসান আহমেদ থেকে পাবে ৬২ লাখ ২৫ হাজার ৬৪৫ টাকা ও মার্কেটিং বিভাগের ওহিদুর রহমান থেকে পাবে ২৪ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৪ টাকা। এসব শিক্ষকের টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও চিঠির সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানি বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটা শুরু করার জন্য আমি উপাচার্যকে অবগত করেছি। পরবর্তীতে আর এ বিষয়ে আমার সাথে এখনো আলোচনা হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, ‘দেশের সাম্প্রতিক নানা প্রতিকূলতার কারণে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে উঠেনি।এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রমোশনের একটি বিষয় রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ সহ অন্য যে বিষয়গুলো আছে তা ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ করা হবে।'
আ.দৈ/আরএস