রাঙামাটিতে সারাদেশে চলমান ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সাধারণ ছাত্র-জনতার আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সমাবেশে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন মোঃ শহিদুল ইসলাম (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ,অনার্স ৪র্থ বর্ষ)। এতে বক্তব্য রাখেন তানজিনা আক্তার (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, অনার্স ২য় বর্ষ), দীপ্ত চাকমা (এইচএসসি ২০২৪), হোসাইন মল্লিক (ইংরেজি বিভাগ, অনার্স ৩য় বর্ষ), মোঃ সাইমুন ইসলাম (ব্যবস্থাপনা বিভাগ, অনার্স ৩য় বর্ষ), মোঃ ইমাম হোসেন (গণিত বিভাগ, অনার্স ৩য় বর্ষ), ওয়াহিদুজ্জামান রোমান (গণিত বিভাগ, অনার্স ৪র্থ বর্ষ), বিশিষ্ট সমাজসেবক জুঁই চাকমা, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ছাত্র উপদেষ্টা মোঃ কামাল উদ্দিন।
রাঙামাটি সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিনা আক্তার বলেন, “আমরা গ্রাম থেকে শহরে পড়াশোনা করতে আসি, কিন্তু এখন কি আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারি? দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও সন্ত্রাসের ঘটনা আমাদের আতঙ্কিত করছে। আমরা কি পড়াশোনা করব, নাকি ঘরে বসে থাকব?”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ ইমাম হোসেন বলেন, “শুধু ফেসবুক পোস্ট দেওয়া বা ব্যানার হাতে দাঁড়ানো যথেষ্ট নয়। আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে সামাজিকভাবে মানুষকে সচেতন করা, যেন এসব অপরাধ থেকে দূরে থাকা যায়।”এইচএসসি পরীক্ষার্থী দীপ্ত চাকমা বলেন, “ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তাদের চার দেয়ালের মধ্যে না রেখে প্রকাশ্যে শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।”
বিশিষ্ট সমাজসেবক জুঁই চাকমা বলেন, “আমরা দেখেছি, বিগত কয়েকটি সরকারে নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু নারীদের সুরক্ষার জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নারীর উন্নয়ন নিয়ে নীতিমালা তৈরি হলেও, তা বাস্তবায়নে কোনো আন্তরিকতা ছিল না।”
বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও ছাত্র উপদেষ্টা মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, অনেকে আবার অতিতের ফ্যাসিস্ট আমলের ধর্ষণের চিত্র তুলে ধরে এটা বুঝাতে চাচ্ছে যে আগেইতো ভালো ছিলাম। তবে সত্যি কথা হচ্ছে, সেঞ্চুরি মানিকদের সহচররা এখনো এই সমাজে আছে। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সেই সন্ত্রাসী ধর্ষক, যে একশটা ধর্ষণ করে ফূর্তি করেছে কিন্ত তাকে কিছুই বলা হয় নি। অথচ তখন সরকার প্রধান ছিলো ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যিনি নিজেও একজন নারী!
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে বনরূপা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
আ. দৈ. /কাশেম/ সাখাওয়াত