বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর কর্মতৎপরতায় ঢাকাসহ সারা দেশে মব জাস্টিস-চাঁদাবাজি-হত্যা আগের চেয়ে কমেছে বলে দাবি করেছেন সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, অপরাধের হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। হটস্পটগুলো সার্বক্ষণিক ২৪ ঘণ্টা নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) -এর প্রেস ব্রিফিংয়ে গত ৫০ দিনে সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি এসব তথ্য জানান।
সারা দেশে মব জাস্টিসের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সেনাবাহিনীর কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধু মব জাস্টিস নয়, চাঁদাবাজি, চুরি, রাহাজানি ও হত্যা আগের চাইতে কমেছে। গত দুই মাস আগে চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল ২৫০ কিন্তু বর্তমানে কমে ১২০-এ এসেছে। চুরি ৮৫০-এর মতো হতো বর্তমানে ৬০০-র নিচে নেমে এসেছে। হত্যা সাড়ে তিনশ ছিল বর্তমানে ১২০-এ নেমে এসেছে। সেনাবাহিনীর কর্মতৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, এসব অপরাধের হটস্পট চিহ্নিত করেছি। হটস্পটগুলো সার্বক্ষণিক ২৪ ঘণ্টা নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর মাধ্যমে মব জাস্টিসসহ চাঁদাবাজি, চুরি ও হত্যা আগের চেয়ে কমে এসেছে। অদূর ভবিষ্যতে আরও কমে আসবে।
ঢাকার মোহাম্মদপুর ও বনানীতে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য ও কিছু অবসরপ্রাপ্ত অফিসার ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে আইনের আওতায় তাদের বিচার করা হবে। আর যারা অবসরপ্রাপ্ত সদস্য তাদের দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় বিচার করা হবে। কোনো অন্যায়কে সেনাবাহিনী কখনও প্রশ্রয় দেয় না।
ফাইল ছবি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে, এসব গুজব মনিটরিংয়ে সেনাবাহিনীর কোনো তৎপরতা আছে কি-না জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কারোর মত প্রকাশের সুযোগ রয়েছে। সবাই মত প্রকাশ করবে। সেনাবাহিনী কাউকে বাধা দিচ্ছে না। তবে কে, কেমন, কি মত প্রকাশ করছে তা কতটুকু বস্তুনিষ্ঠ এর বিচারের দায়ভার সাংবাদিকদের উপর দিয়ে দিতে চাই।
বান্দরবানের লামায় আরও কয়েকজন শ্রমিক অপহরণ হয়েছে। তাদের উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর পরিসংখ্যান অনুযায়ী লামা থেকে ২০ জনের মতো শ্রমিককে গুম করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারী কোনো একটি দল অপহরণ করেছে। তাদেরকে উদ্ধারে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ, বিজিবি, আনসার বাহিনীরও অভিযান চলমান রয়েছে। অপহরণকারীরা একটি নম্বর দিয়েছে, হয়ত টাকা চেয়েছে তারা। তাদেরকে উদ্ধারে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম চলমান।
ফাইল ছবি
পার্বত্য অঞ্চলে কুকি-চিনের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে প্রশ্নে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর পেট্রোলিংয়ের কারণে কুকি-চিনের দৌরাত্ম্য কমাতে পেরেছি। গতকালও (রোববার) কুকি-চিনের দুটি ক্যাম্প (আস্তানা) ধ্বংস করেছি। এ ছাড়া কুকি-চিনের অত্যাচারে বাড়িছাড়া ১১টি বম পরিবারকে সম্প্রতি সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাদের গ্রামে আনা হয়েছে। কুকি-চিনের বিরুদ্ধে অভিযানিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার জায়গা অর্জন করতে কোন কোন পন্থা অবলম্বন করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষের পাশে থেকে সেনাবাহিনী সবসময় নিরপেক্ষ পন্থা অবলম্বন করে কাজ করে। জনগণের আস্থার জায়গায় সেনাবাহিনী সবসময় কাজ করছে।
সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করতে গিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী কোনো চ্যালেঞ্জ ফেস করছে না। তবে
আমরা দীর্ঘ ছয় মাস বাইরে নিয়োজিত রয়েছি। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
ফাইল ছবি
সঙ্গে সমন্বয় করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।