সারাদেশে সরকারি , আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও সেবাখাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে হাজার হাজার কোটি টাকার কেনা কাটায় ক্ষমতার অপব্যহার স্বজনপ্রীতি এবং লাগামহীন লোপাট ধারার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৩০ জন কর্মকর্তাকে ১৫ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কারণ শেখ হাসিনার সরকারের টানা ১৫ বছরে সরকারি অফিস আদালতে সংঘটিত দুর্নীতির ৮০ শতাংশই কেনাকাটা সংক্রান্ত।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সরকারি অফিসগুলোতে দুর্নীতি অনুসন্ধান ও তদন্তে নেমে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উপাত্ত পাচ্ছে দুদক কর্মকর্তারা। এরপরই দুদকের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের নেতৃত্তুে গঠিত কমিশন এবার ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির ৭০-৮০ শতাংশ পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা) ২০০৬ এবং পিপিআর ২০০৮ সংক্রান্ত বিষয়ে আইনী ফাক ফোকরে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টানা ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে দুদক কর্মকর্তাদের দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম আরো জোরদার করা হচ্ছে।
এদিকে গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজে ১৫ দিনব্যাপী দুদক কর্মকর্তাদের সরকারি ক্রয়নীতির ওপর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দুদক চেয়ারম্যান দৃঢতার সাথে বলেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির ৭০-৮০ শতাংশই কেনাকাটা সংক্রান্ত। তিনি সাংবাদিকদের বলেনে, এখানে ১৫ দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ চলবে। এতে দুদকের সহকারী পরিচালক ও উপসহকারী পরিচালক মিলিয়ে ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিচ্ছেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৬ এবং পিপিআর ২০০৮ সংক্রান্ত। এদিকে নজর দিলে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি অনেকাংশে কমিয়ে ফেলা সম্ভব। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায় অসংখ্য দুর্নীতির খবর আপনারা পেয়েছেন। কোথাও অস্বাভাবিক বেশি দামে মালামাল কেনা হয়েছে, কোথাও নিম্নমানের মালামাল কেনা হয়েছে, যা এখন ব্যবহার করা যায় না। এসব ব্যাপারে দুদক কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।’
দুর্নীতি করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি) আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি বন্ধের পাশাপাশি আমাদের সবচেয়ে বেশি নজর রাখতে হবে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়।’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) সভাপতি মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম রিজু।
আ. দৈ. / কাশেম