স্বপ্ন ছিলো বিদেশ পাড়ি জমিয়ে পরিবারের সদস্য দিবেন স্বচ্ছলতা। সেই স্বপ্ন পূরণে ফরিদপুরের দুই যুবক ইতালির যাত্রা থমকে যায় লিবিয়াতে। সেখানেই দালাল চক্র হত্যা করে তাদের দুজনকে। ঘটে দুই যুবকের পরিবারের স্বপ্ন ভঙ্গ।
নিহত দুই যুবক ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৬) আর মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৫) ।
পরিবার জানায়, শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি দালালচক্র। তাদের হত্যার পর পরিবারের স্বজনদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে তাদের ছবিও পাঠিয়েছে খুনিরা।
শুক্রবার ( ৩১ জানুয়ারি) হৃদয়ের পিতা মিন্টু হাওলাদার জানান, ‘দুমাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সৌদি আরব, তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ তাকে ইতালি নেওয়ার কথা বলেছিল তারা।’
হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান জানান , ‘চার পাঁচদিন ধরে হৃদয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। ওরা আজ আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরো টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। সে টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে।’
সন্তান হারানোর খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে পুরো পরিবার। এসময় শোকের মাতমে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।
ওই গ্রামের নিবাসী ফয়সাল হোসেন জানান, ‘শুধু হৃদয় নয়, রাসেল নামের আরও একজনকে লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওই মানব পাচারচক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনো অত্যাচার কখনো প্রাণে মেরে ফেলে ওরা।’
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান জানান, ‘ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সাথে আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমআই