যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ছয় লাখ ভেনেজুয়েলান অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোয়েম জানিয়েছেন, ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের জন্য দেওয়া সাময়িক প্রোটেকটেড স্ট্যাটাস (TPS) প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বাতিল
জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের এই সুবিধা প্রদান করেছিলেন, যার ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার এবং কাজ করার অনুমতি পেয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসন পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর এই সুবিধা বাতিল করেছে।
নোয়েম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের আগের প্রচেষ্টা ও আইনি বাধা
২০১৭ থেকে ২০২১ সালে ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের এই সুবিধা বাতিলের চেষ্টা করেছিলেন। তবে তৎকালীন ফেডারেল কোর্টের রায়ে তিনি তা করতে পারেননি। এবার, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প প্রশাসন পুনরায় সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছে।
ভেনেজুয়েলাসহ অন্যান্য অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব নোয়েম জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিওর সঙ্গে আলোচনা চলছে, কীভাবে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো যায়। একইসঙ্গে অন্যান্য দেশের অবৈধ অভিবাসীদের নিয়েও আলোচনা চলছে।
তিনি আরও বলেন, "গুয়ান্তানামো বে-তে থাকা মার্কিন নৌঘাঁটিতে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর আগে কিউবা ও হাইতির অভিবাসীদেরও সেখানে রাখা হয়েছিল।"
সাময়িক প্রোটেকশন স্ট্যাটাস (TPS) প্রোগ্রাম
সাময়িক স্ট্যাটাস প্রোগ্রাম (TPS) এমন এক ব্যবস্থা, যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রাজনৈতিক সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নাগরিকরা সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি পান। বর্তমানে ১৭টি দেশের ১০ লাখেরও বেশি অভিবাসী এই সুবিধা পাচ্ছেন।
ভেনেজুয়েলানদের জন্য পূর্ববর্তী মানবিক সহায়তা
বাইডেন প্রশাসন ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের জন্য এই সুবিধা দিয়েছিল সেখানকার রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মানবিক সংকটের কারণে। দেশটির শাসনব্যবস্থাকে ‘অমানবিক শাসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের TPS-এর আওতায় আনা হয়েছিল।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়ন
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন,
"আমি সীমান্ত সুরক্ষা কঠোর করব এবং অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাব।"
বর্তমানে সেই প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আ. দৈ./ সাধ