বাংলাদেশে যখনই চালের মূল্য বাড়ার খবর মিডিয়ায় আসে, সাথে সাথে বলা হয় চালের আমদানি বাড়ানো হচ্ছে। ১০ হাজার টন চাল নিয়ে বিদেশী জাহাজ বন্দরে আসলেই বলা হয় এবার বাজারে চালের দাম কমবে। কি আশ্চর্য বয়ান? বাংলাদেশে গ্রামে সকালে পান্তা ভাত খেতেও প্রয়োজন হয় প্রায় ৩০ হাজার টন চাল।
বলা প্রয়োজন, প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যবহার হয় প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টন চাল। আমদানিতে যখন কাজ হচ্ছে না, অতি সম্প্রতি আবার বলা হচ্ছে “মোটা চাল” খেতে।
যে জাতি “চিকন চাল” খাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে তাকে যদি বলা হয় মোটা চালের ভাত খেতে- তা কেমন করে হয়? গণ হারে আমদানি করা মানে, দেশে বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া এবং কৃষক ও দিনমজুররা আরও দরিদ্র সীমার নীচে চলে যাওয়া।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে কৃষি পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় এটার সুফল থেকে কুফল যে বেশি এতে কোন সন্দেহ নেই।
আজ পর্যন্ত কৃষক ও কৃষি তাদের “রাডারে” নেই।আজ কৃষি পণ্যের লাগামহীন আমদানি এর জন্য আনেকাংশেই দায়ী। এইভাবে আমদানি করার পরও দাম না কমার কারণ হচ্ছে দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিয়ন্ত্রনহীন বাজার ব্যবস্থা। তাই সরকার যে পথ বেছে নিয়েছে তাতে দেশের বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধি হ্রাসের সম্ভবনা খুবই ক্ষীণ।
শেষ করব এই বলে, ২০০৮ সালে কেয়ারটেকার সরকারের সময় চালের দাম যখন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না তখনকার খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন “ চালের মূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের” কিছু করার নেই। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।এরপরও, পরদিন তিনি পদত্যাগ করেছিলেন।
লেখক: প্রাক্তন সিনিয়র টেকনিকাল অফিসার, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা