বলিউডি অভিনেত্রী ও পরিচালক কঙ্গনা রানাউত বেশ কয়েক বছর ধরে তার ‘ইমার্জেন্সি’ সিনেমা নিয়ে বহু তথ্য প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে বানানো এই সিনেমায় যে বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমানকে দেখানো হচ্ছে, সে বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন তিনি।
গত ১৭ জানুয়ারি সিনেমা মুক্তির পর দেখা গেল বঙ্গবন্ধু আছেন এই সিনেমায়। আর তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা ঋষি কৌশিক। কৌশিক বলেন, আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। কারণ আমার চেহারার সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের চেহারার কোনো মিল নেই। সিনেমা মুক্তির পর সোশাল মিডিয়ায় নিজের চরিত্রের লুক প্রকাশ করেছেন ঋষি।
অভিনেতা জানিয়েছেন, ২০২২ সালে কঙ্গনার প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে ঋষির কাছে তার কিছু ছবি চাওয়া হয়। অভিনেতা পরে জানতে পারেন যে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের জন্য তাকে নির্বাচন করা হয়েছে।
ঋষি বলেন, “আমাকে নির্বাচন করার পর চরিত্রের লুকসেট করতে এক দিনের জন্য মুম্বাই গিয়েছিলাম। মেকআপের পর নিজেকেই চিনতে পারছিলাম না। মেকআপ শিল্পীরাও বললেন যে তারা বঙ্গবন্ধুর চেহারার সঙ্গে ৯০ শতাংশ লুক মিলিয়ে দিয়েছেন।“ রূপটানের অভিজ্ঞতা নিয়ে কৌষিক বলেছেন, প্রস্থেটিক রূপটানের জন্য প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগত তার। এখনো সিনেমাটি দেখেননি জানিয়ে ঋষি বলেছেন, পরিচিতদের থেকে ‘ভালো’ প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, “যারা আগে থেকে বিষয়টা জানতেন তারা সিনেমা দেখে প্রশংসা করছেন। আবার অনেকেই রয়েছেন যারা আমাকে দেখে চিনতেও পারেননি। বিষয়টি বেশ মজার।“ সিনেমায় ঋষির সঙ্গে কঙ্গনার কোনো দৃশ্য ছিল না। তবে শুটিং ফ্লোরে কঙ্গনাকে সব সময়ই কাজের মধ্যে পেয়েছেন অভিনেতা।
কঙ্গনা পরিচালক হিসেবে কেমন জানতে চাইলে ঋষি বলেছেন, কঙ্গনা তাকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। ঋষির কথায়, শুটিংয়ের সময় অবাঙালি অভিনেতাদের বাংলা বলতে সমস্যা হচ্ছিল।আমি বাঙালি বলে কঙ্গনা আমাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন, যাতে অবাঙালি অভিনেতারা সঠিক বাংলা বলেন। ‘ইমার্জেন্সি’ সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিন মনে রয়ে যাবে বলে ভাষ্য ঋষির।
২০২২ সালে ‘ইমার্জেন্সি’ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন কঙ্গনা। সম্পত্তি বন্ধক দিয়ে সেই টাকায় গেল বছরের শুরুতে শুটিং শেষ করেন তিনি।বিজেপির সংসদ সদস্য কঙ্গনা প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের নেত্রী ইন্দিরাকে কোন রূপে দেখাতে চাইছেন, তা নিয়ে বেশ কৌতূহল ছিল।
কঙ্গনা শুরু থেকে বলেছেন ‘ইমার্জেন্সি’ কোনো বায়োপিক না, এটি একটি রাজনৈতিক সিনেমা। সিনেমার পটভূমি গত শতকের সত্তরের দশক, ভারতে তখন ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন থেকে পরবর্তী ২১ মাস ভারতে জরুরি অবস্থা চলে। সিনেমায় সেই সময়ের রাজনৈতিক আবহ তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে বলে কঙ্গনার ভাষ্য।
এই সিনেমায় কঙ্গনা কেবল ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রেই অভিনয় করেননি, ‘ইমার্জেন্সি’র গল্পও কঙ্গনার লেখা, প্রযোজনা ও পরিচালনার দায়িত্বেও ছিলেন এই অভিনেত্রী। সিনেমায় কঙ্গনা ছাড়াও অনুপম খের, মহিমা চৌধুরী, মিলিন্দ সোমান, শ্রেয়াস তালপাড়ে, বিষক নায়ার, সতীশ কৌশিকসহ একাধিক অভিনয়শিল্পী কাজ করেছেন।
আ. দৈ/ সাম্য