বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের শরীরে দুর্নীতিগ্রস্ত শেখ পরিবারের রক্ত। যারফলে যুক্তরাজ্যে এমপি হওয়ার পরেও টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। তিনি বলেন, টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যে বড় হয়েছে, লেখাপড়া করেছে। সেদেশে একজন এমপি দুর্নীতি করবে, এটা স্বপ্নেও ভাবা যায় না।
তিনি বলেন, কিন্তু তার ‘জিন’ হচ্ছে বাংলাদেশের শেখ পরিবারের। ওখানে লেখাপড়া করে এমপি হওয়ার পরেও তার জেনেটিক্যাল যে লাইন, সেই লাইন সে ক্রস করতে পারেনি। আর করতে পারেনি বলেই তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো, দুর্নীতির প্রমাণগুলো এখন বেরিয়ে আসছে।
আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-কেআইবিতে এগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এটিএম খালেদের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভা হয়। এ্যাবের আহ্বায়ক কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কৃষিবিদ জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ শাহাদাত হোসেন বিপ্লব প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে। এখান থেকে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংক থেকে সেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এটা একদম সুস্পষ্ট, গণমাধ্যমগুলোতে এসেছে। আওয়ামী লীগের দুর্নীতির বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না। তারা উন্নয়নের নামে টাকা পাচার করেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে বেশি অপমানিত করছে। মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদান তুলনামূলক কম। দলটির ভেতর রাজনৈতিক উন্নয়নের কথা নেই। তারা মনে করত- তাদের রাজনীতির বাইরে গেলে সবাই অপরাধী। ভারত কী কারণে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে- এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আজকে শেখ হাসিনা কী স্ট্যাটাসে ভারতে আছেন? শেখ হাসিনার দুটি পাসপোর্ট, দুটিই বাতিল হয়েছে। তারপরও কী স্ট্যাটাসে, কীভাবে ভারত তাকে সে দেশে রাখে? এত বড় একজন দুর্নীতিবাজ, ছাত্র-জনতার হত্যাকারী, তাকে ভারত রাখে কীভাবে? আজকে এটা বাংলাদেশের মানুষের জিজ্ঞাসা।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগেরই একজন ঘনিষ্ঠ লোক বলেছেন- শেখ মুজিবুর রহমান একজন বড় নেতা ছিলেন। কিন্তু তার পরিবারের প্রতি তিনি দুর্বল ছিলেন। তিনি তার ছেলে-ভাগ্নেদের কন্ট্রোল করতে পারেননি। জাহানারা ইমাম, শেখ হাসিনার কাছের লোক ছিলেন- তিনি এসব কথা বলে গেছেন। দেশের কীসের উন্নয়ন, দেশপ্রেম- সবকিছুতে চাঁদাবাজি করে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তারা উন্নয়ন উন্নয়ন করত, উন্নয়নের মধ্য দিয়েই তো টাকা পাচার করা যায়। উন্নয়ন কী তার বাবার টাকা দিয়ে করেছেন? উন্নয়নের নামে বিদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে এসে পাচার করেছেন, লুটপাট করেছেন।
এটিএম খালেদ হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এতদিন হয়ে গেল- তার বিচার এখনো হয়নি কেন? এ দায় আপনাদের কৃষিবিদদেরও আছে, আমাদের সবার আছে। এ রকম একজন প্রখ্যাত ছাত্রনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা- তার হত্যার বিচার হলো না, এটা অত্যন্ত কষ্টের বিষয়।
আ. দৈ. /কাশেম