আদালতের কোন নির্দেশনা নেই। নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন পরোয়ানাও। তবু দলবল নিয়ে হাজির হন ঋণগ্রহীতার প্রতিষ্ঠানের সামনে। সেখানে গিয়ে করছেন মানববন্ধন। মাইকিং করে সামাজিকভাবে হেনস্তা করছেন শিল্পকারখানার মালিকদের। আইনের তোয়াক্কা না করে এমন সব কাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুম-খুনের নায়ক কারাগারে আটক জেনারেল জিয়ার ব্যাচম্যাট মেজর (অব.) নিজাম ইবনে সিরাজ। সূত্র মতে, গত বেশ কয়দিন যাবৎ রাজধানীর গুলশান,বনানী ও নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় শিল্পকারখানার সামনে পরিকল্পিতভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরেও ইউনিয়ন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪-৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে সেখানে গিয়ে করছেন মানববন্ধন। মাইকিং করে সামাজিকভাবে হেনস্তা করছেন শিল্পকারখানার মালিকদের সামাজিক ভাবে হেয় করেছেন দেশের স্বনামধন্য শিল্পপতিদের। ভবিষ্যতেও এসব করে যাবেন বলে জানান তিনি। এই কর্মকর্তা ব্যাংকটির দায়িত্বে আছেন স্পেশাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে, রিকভারি বিভাগে।
ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা ঋণগ্রহীতার প্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে কর্মসূচি পালনের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। উদ্ধতভাবে দাবি করেছেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আদালতের নির্দেশনা জরুরি নয়। ঋণখেলাপিদেরি বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে এসব তিনি করতেই পারেন।
সেনাবাহিনীর বহিস্কৃত মেজর জেনারেল, সারা দেশে গুম-খুনের নেপথ্যের নায়ক, বর্তমানে কারাগারে থাকা জিয়াউল আহসানের ব্যাচম্যাট ছিলেন নিজাম ইবনে সিরাজ। অভিযোগ রয়েছে, জিয়াউল আহসানের প্রভাবেই ইউনিয়ন ব্যাংকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। তবে নিজাম ইবনে সিরাজ জিয়ার ব্যাচম্যাট স্বীকার করলেও জিয়ার বদৌলতে চাকুরী নিয়েছন এমন অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবী করেন।
৫ আগস্টের পর অনেক ব্যবসায়ী এখনো দেশের বাইরে আছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান চলছে ধুকে ধুকে। এর মধ্যেই অনেক ব্যবসায়ী দেশের অর্থনীতি সচল রাখার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি এরকম একাধিক শিল্প কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে মাইকিং করে শিল্পপতিদের সামাজিকভাবে হেয় করার ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও চরম আতাঙ্ক বিরাজ করছে।
ইউনিয়ন ব্যাংকের একটি সুত্র থেকে জানা গেছে, চলতি মাসেই সেনাবাহিনীর সাবেক এই মেজর নিজামের চাকুরীর মেয়াদ শেষ। কিছুটা অতি উৎসাহী এই কর্মকর্তা পুঃন নিয়োগ লাভের আশায় এমন নিয়ম বহির্ভূত কাজ করে বেড়াচ্ছেন। ব্যাংকের ফেইসবুক আইডিতেও এসব কর্মসুচীর ছবি আপলোড করেছেন। এতে অনেক ইউজার বিরুপ মন্তব্য করায় ব্যাংকের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও দাবি করেন একাধিক কর্মকর্তা।
যে সব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ব্যাংকের কিস্তি দিয়ে যাচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সামনে মাইকিং করে মালিকদের সামাজিকভাবে হেয় করা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী নিখাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে মাইকিং করার কোন রীতি নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক এমন কোন নির্দেশনাও জারি করেনি। তবে সংক্ষুব্ধ শিল্পপতিরা এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আজ. দৈনিক/ কাশেম