রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫,
১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার

রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
বিনোদন
কক্সবাজার সৈকতে অসংখ্য খোলা খাবারের দোকান,স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পর্যটক
কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
Publish: Sunday, 12 January, 2025, 8:24 PM  (ভিজিট : 138)

নিরাপদ খাদ্যের মান নিশ্চিত করা বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ। কক্সবাজার সৈকতের আশেপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য খোলা ও মানহীন ফাষ্ট ফুড, বারবিকিউ সহ খাবার হোটেল। এসব খোলা খাবার খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে পর্যটক সহ ঘুড়িতে আসা স্থানীয়রা। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিষয়টি নিয়ে দেখভালের দায়িত্ব থাকলেও মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম নেই বললে চলে। মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও তার ধারাবাহিকতা না থাকায় মিলছেনা কোন সুফল। বরং এসব অভিযান অভিযানের মধ্যেই থাকছে সীমাবদ্ধ। পর্যটন এলাকার কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে বেশ পরিচিত এবং জনপ্রিয়। 

এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের পদচারণা। এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে কিছু খাবারের দোকান। মুখরোচক এসব খাবার প্রতিদিন খাচ্ছে পর্যটকেরা। দামে সস্তা হওয়ায় বিক্রিও হচ্ছে বেশ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে সুগন্ধা বীচ ও কলাতলী পর্যন্ত ৫'শো গজের মধ্যে শতাধিকের বেশি খাবারের দোকান রয়েছে। তারমধ্য ফিস ফ্রাই'র 
দোকান রয়েছে অন্তত ৫০ ৭০টি টি, পিঠাপুলির দোকান ২০ থেকে ৩০টি এবং খাবারের দোকান গড়ে উঠেছে ২০-২৫ টি। এসব খাবার সম্পূর্ণ খোলা অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে এবং পর্যটকেরা খাচ্ছেন সেই খাবার। 

কথা হয় মায়শা ভাতঘর এন্ড বিরানী হাউসের মালিক জাকির হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, 'ফরিদপুর থেকে তিনবছর আগে কক্সবাজার এসেছি। আমার পেশা ভাতের হোটেল। অল্প দামে মানসম্মত খাবার পরিবেশন করি। 

খোলা খাবার কিভাবে মানসম্মত হয় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমার বাসায় রাতে এসব খাবার রান্না করে সকালে সুগন্ধা পয়েন্টে নিয়ে আসি। আমার দোকানে ৭ টি আইটেম রয়েছে। মুরগী, ভর্তা, ডাল দিয়ে ১০০ টাকার প্যাকেজ এবং মাছ, ডাল, ভর্তা দিয়ে ১৫০ টাকার প্যাকেজ।

এদের কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটি দোকান বসাতে দিতে হয়েছে ১০-২০ হাজার টাকা। প্রতিদিন একটি চাঁদাও বহন করতে হয়। কিছু বীচকর্মীও পান সিগারেটের কথা বলে টাকা নেয়। তবে অভিযানের ভয়ে থাকে সারাক্ষণ। একবার অভিযান হলে দ্বিতীয় বার দোকান বসাতে আবারও দিতে হয় টাকা। এদের একজন বলেন, আপনি কি রিপোর্ট করবেন? করেন!  তবে আমাদের একটু খেয়াল রাখবেন। একবার উচ্ছেদ হলে আবার টাকা দিতে হয়।

তার পাশের দোকান 'আল্লাহর দান ভাত ঘর'-এ একই আইটেম। তারা প্রত্যেকেই প্যাকেজ দিয়ে প্যাকেজ অনুসারে ভাত বিক্রি করছেন। একেবারে সড়কের পাশে হওয়ায় ধুলাবালি সরাসরি গিয়ে পড়ছে খাবারের ওপরে। কয়েকটি দোকানে পলিথিন থাকলেও তা ছেঁড়া। 

খাবার খেয়ে চলে যাচ্ছিলেন আজিজুর রহমান ও সাবিহা দম্পতি। তাঁদের সাথে কথা হয় এ-ই প্রতিবেদকের। জানতে চাইলে আজিজুর রহমান বলেন, 'বিক্রেতারা ঘরোয়া পরিবেশের রান্না করে বিক্রি করছেন। এছাড়া ভালো হোটেলে গেলে দামটাও ভালো মানের নিয়ে নেয়। তা-ই এখানে রাতের খাবার সেরেছি।
কি খেয়েছেন এবং দাম কেমন নিলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, '১৫০ টাকার প্যাকেজ নিয়েছি। ভাত, সুরমা মাছ, ভর্তা, ডাল, ডিম দিয়েছে। এসব খাবার অন্য জায়গায় খেতে হলে কমপক্ষে ৩০০ টাকা আসতো।

আরেকটি দোকানে কয়েকজন মিলে খাবার খাচ্ছেন। খাবার শেষে তাঁদের সাথে কথা হয়। গাজীপুর থেকে তারা এসেছেন। তারা সকলে ছাত্র। তাঁদের একজন রিয়াদ। তিনি বলেন, 'আমরা গত বৃহস্পতিবার এসেছি। একটি কটেজে সবাই উঠেছি। ফুটপাতে খাবারের পরিবেশ এবং দাম নিয়ে তিনি বলেন, যেভাবে খাবার সাজানো সেভাবে ভালো হয়নি। মুরগী, ডাল, ভর্তা, ডিম ১০০ টাকা নিয়েছে। খাবার একেবারে বাজে। কোনো মজাই পেলাম না!'

জানতে চাইলে জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো: নাজমুল ইসলাম বলেন, 'আমি প্রতি সপ্তাহে একবার করে মনিটরিং করি। কয়েকবার স্টেপও নিয়েছিলাম। কিন্তু, লোকবল সংকটের কারনে পারছিনা। তাঁদেরকে অনেকবার বলেছি। কিন্তু শুনেনা। এছাড়া সঠিক কোনো অভিযোগও পাইনি। পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেের সহকারী অধ্যাপক সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ ডা: মো : শাহজাহান নাজির বলেন, 'এসব খাবার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি করতে হবে। না হয়, পানি বাহিত যে সকল রোগগুলো আছে, যেমন- টাইফয়েড, কলেরাসহ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ হতে পারে।

অপরদিকে ভাজা মাছ বিক্রির দোকানগুলোতেও খাবার মান নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন আছে। পোড়া তেলে  মাছ ভাজি বিক্রি, এমনকি পঁচা মাছ ভাজি করে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায়। 
ডা: শাহজাহান নাজির বলেন, 'ফুটপাতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে খাবার খেয়ে প্রাথমিক অবস্থায় পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা দেখা দিলেও পরে ধাপে ধাপে আর-ও খারাপের দিকে চলে যায়।

জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো: তানভীর হোসেন বলেন, 'রেস্তোরাঁ আইনে নিবন্ধিত হোটেল ছাড়া অন্য সকল খাবারের দোকান অবৈধ। এছাড়া এসব দোকানের কোনো লাইসেন্স নেই। অনুমতি ব্যতিত মান বজায় না রেখে খাবার পরিবেশন করা অপরাধ। আমরা বহুবার অভিযান পরিচালনা করেছি। একদিকে সরিয়ে দিলে অন্যদিকে বসে যায়। গত ডিসেম্বর মাসেও অভিযান চালিয়েছিলাম। এসব খাবার রিকশাওয়ালা ও ব্যবসায়ীরা খেয়ে থাকে। শিগগিরই অভিযান চালানো হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

আ. দৈ. /কাশেম/ বিজন 
   বিষয়:  কক্সবাজার   সৈকত   খোলা খাবারের দোকান   স্বাস্থ্য    ঝুঁকিতে    পর্যটক  
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নারী নির্যাতন বন্ধে আইনের সংশোধন প্রয়োজন: মামুনুল হক
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
ভারত-পাকিস্তান সংকট নিরসনের চেষ্টা করছে সৌদি আরব
পাঁচ বছর আগে অপহরণ হওয়া স্কুলছাত্র নিজেই ফিরল বাসায়
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিএনসিসিতে বর্জ্যব্যবস্থাপানা বিভাগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান
কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ভিডিও প্রকাশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের সভা
পদত্যাগ করলেন আটাবের সবুজ মুন্সী
ঢাকা দুই সিটিতে আওয়ামী দোসর ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় বিএনপির ব্যাপক তদবির
বিনোদন- এর আরো খবর
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝