নদী পাড়ের জমি অবৈধ ভাবে দখল করে বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজী ও এলাকায় গুন্ডা বাহিনী নিয়ে দাপিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা ও নানা অপকর্মের হোতা গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইট সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। গ্রেফতারকৃতদের গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাদের মধ্যে সোহরাব হোসেন আপেল ও শফিকুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। রকি নামের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
জানান গেছে, সোমবার দিনগত হয়ে (গতকাল মঙ্গলবার ভোরে) যৌথবাহিনী সাঘাটার গোবিন্দী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট, সোহরাব হোসেন আপেল, শফিকুল ইসলাম, বাশহাটা গ্রামের সাহাদৎ হোসেন পলাশ ও উত্তর সাথালিয়া গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম রকিকে গ্রেফতার করে সাঘাটা থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
পরে গ্রেফতারকৃতরা অসুস্থ হয়ে পড়লে থানা পুলিশ সকালে তাদেরকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শফিকুল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলাম রকিকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্যদের গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে স্থানান্তার করা হয়। দুপুরের দিকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান হাসপাতালে শফিকুল ইসলাম ও গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে সোহরাব হোসেন আপেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সাঘাটা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম গ্রেফতার ও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ইউপি চেয়ারম্যান সুইট ও তার ভাই সুজাউদদৌলা সুজা সহ তাদের বাহিনীর সদস্যদেরকে গ্রেফতারের দাবিতে গত প্রায় ১৫দিন ধরে দফায় দফায় মানববন্ধন করে আসছে এলাকাবাসী। সর্বশেষ ২৭ আগস্ট সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্বারকলিপি পেশ করা হয়। এলাকার লোকজন অভিযোগ করেন, সুইট চেয়ারম্যান বাহিনীর দির্ঘদিনের নির্যাতন, অপমান ও ক্ষোভে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ছাত্র-জনতার অভ্যুথানের পর তাদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন সহ নানা কর্মসুচি পালন করে আসছে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সুইট ও তার ভাই সুজা নিজস্বন বাহিনী নিয়ে মটরসাইকেল শো-ডাউন করে এলাকার লোকজনকে শাসিয়ে বেড়াচ্ছে। অতি সম্প্রতি উপজেলার ভরতখালী বাজারে প্রতিপক্ষের লোকজনের দোকানপাট, ব্যবসা কেন্দ্রে হামলা চালানোরও অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। এসময় বাঁধা দিলে চেয়ারম্যান বাহিনীর মারপিটে ভরতখালী এলাকায় ৩জন আহত হয়।
আ. দৈ. / কাশেম/ মিজানুর