বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কোদালিয়া নদীর সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি দাবি করেছে যে, তারা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার মধ্যবর্তী বাগদা ব্লকের রণঘাট গ্রাম সংলগ্ন কোদালিয়া নদী বরাবর ৫ কিলোমিটার এলাকা পুনরুদ্ধার করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
বিজিবির এই দাবির পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সেই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে পাল্টা বক্তব্য দিয়েছে।
সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি
সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিজিবি নিয়মিত মাইকিং করে তাদের এই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। বিজিবির দাবি, নদী ও এর সংলগ্ন প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অন্তর্গত। অন্যদিকে, ভারতের স্থানীয় কৃষকরা জানান, তারা এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস ও কৃষিকাজ করে আসছেন এবং হঠাৎ করে বিজিবির এমন দাবি তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
বিজিবির অবস্থান
বিজিবির দাবি, ১৯৬১ সালের মানচিত্র অনুযায়ী কোদালিয়া নদী বাংলাদেশের সীমান্তের মধ্যে পড়ে। সম্প্রতি এই এলাকার মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর তারা বিএসএফের অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং পরে এই ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করে। বিজিবি জানায়, তারা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে যন্ত্রচালিত বোট এবং অল টেরেইন ভেহিকেল (এটিভি) ব্যবহার করছে।
বিএসএফের পাল্টা বিবৃতি
বিএসএফ এই খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে এবং জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিও অন্য কারো দ্বারা অধিগ্রহণ করা হয়নি। তারা দাবি করে, সীমান্তের উভয় বাহিনী ‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নির্দেশিকা, ১৯৭৫’ অনুসারে তাদের নিজ নিজ এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, কোদালিয়া নদী বরাবর কাঁটাতারের ব্যবস্থা নেই, যা এই ধরনের বিভ্রান্তি ও দাবি-দাওয়ার জন্ম দিয়েছে। তারা মনে করেন, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি পেলে এই ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
এ ঘটনায় সীমান্তে সামান্য উত্তেজনা থাকলেও বড় ধরনের কোনো সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি। উভয় দেশই এই বিষয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছে।
আ. দৈ./ সাধ