পোষ্য কোটা বাতিলসহ ৯ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে এ অবস্থান কর্মসূচি ও আমরণ অনশন শুরু করেছেন খান তালাত মাহমুদ রাফিসহ পাঁচজন।
দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিসহ পাঁচ শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। কর্মসূচিতে আরও আছেন চবির সমন্বয়ক ও ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের রশিদ দিনার, বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শুভ হোসাইন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের আশিকুর রহমান ও আইন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের সাইরিব সুপ্ত।
এ সময় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে ‘পোষ্য কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও আমরণ অনশন’ কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। এছাড়াও তারুয়ার ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটার ঠাঁই নাই; ফরহাদের ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটার ঠাই নাই; পোষ্য কোটার বাতিল চাই; জুলাই হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করুন; তেলা মাথায় তেল দেওয়া বন্ধ করুন প্রভৃতি স্লোগান সম্বলিত পোস্টার দেখা যায়।
খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, কমিটির নামে প্রশাসনের নাটকবাজি বন্ধ চাই। আমরা পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিল চাই। পোষ্য কোটা বৈষম্যের প্রতীক, যা মেধাবীদের অধিকার হরণ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যায্যতার পরিবেশ নিশ্চিত না করলে আমরা অনশন থেকে সরছি না।
বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শুভ হোসাইন বলেন, জুলাই আন্দোলন আমরা সকল বৈষম্য দূর করার জন্য করেছি, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোনো যৌক্তিকতা আমি খুঁজে পাই না। পোষ্য কোটা বাতিল না করলে আমরা অনশন ভাঙবো না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. অধ্যাপক শামিম উদ্দীন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। পোষ্য কোটা নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে, তা নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কার্যকর সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, তারা যেন অনশন ভেঙে আলোচনায় অংশ নেয়। আমরা তাদের কথা শুনতে প্রস্তুত।
গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে নয় দফা দাবি নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি হলো, ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ২০০ টাকা; পোষ্য কোটাসহ সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিল; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু; বন্ধ হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা, বাড়ির দূরত্ব ও মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ; অতিদ্রুত নতুন দুইটি হল নির্মাণের উদ্যোগ; ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সামাজিক সংগঠনসমূহকে অফিস বরাদ্দ; অনতিবিলম্বে টিএসসি ভবন নির্মাণ; অতিদ্রুত চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন; প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড অনলাইনভিত্তিক এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুপ্ত হামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আ. দৈ/ আফরোজা