এমন অনেক গুনাহ আছে যেগুলো করলে শুধু একটি গুনাহ হয়, কোনো নেক আমল নষ্ট হয় না। যেমন- মিথ্যা বলা, চুরি করা, ঘুষ খাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু এমন একটি গুনাহ আছে, যেটা করার দ্বারা একটি গুনাহ তো হয়ই, সঙ্গে সঙ্গে নেক আমল নষ্ট হয়ে যায়। এ রকম একটি গুনাহ হলো রিয়া বা লৌকিকতা, যা নেক আমল ধ্বংসের নীরব ঘাতক।
নিচে লোক-দেখানো কাজের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হলো-
এক. আল্লাহর সুদৃষ্টি থেকে পড়ে যাওয়া: যারা লোক-দেখানোর জন্য আমল করে, তারা মানুষের কাছে বড় হলেও আল্লাহর নজর থেকে পড়ে যায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ যাকে লাঞ্ছিত করেন তার কোনো সম্মানদাতা নেই, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা-ই করেন, যা তিনি চান।’ (
সুরা : হজ, আয়াত : ১৮)
দুই. আল্লাহর দরবারে সিজদা বঞ্চিত হওয়া: কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহ তাআলা তাঁর নুর প্রকাশ করবেন, তখন সব মাখলুক সিজদায় লুটে পড়বে, ঈমানওয়ালারা সেদিন সিজদা করবে, তবে কাফির, মুশরিক, মুনাফিক ও রিয়াকারী সিজদা করতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় লোক-দেখানোর জন্য সিজদা করতো, কিয়ামতের ময়দানে তার কোমর একেবারে সোজা হয়ে যাবে, সে সিজদা করতে সক্ষম হবে না। আল্লাহ তাআলা তাকে সিজদার করার সুযোগ দেবেন না। (
মুসলিম, হাদিস : ২৬৯)
তিন. রিয়াকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে: রাসুুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য এবং তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ লাভের জন্য বয়ান করে, আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন রিয়াকারী দলের অন্তর্ভুক্ত করে দেবেন। (
মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৫৪৯৩)
চার. কিয়ামতের দিন অপমানিত হবে: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলছেন, আমি তোমাদের ওপর যে জিনিসটিকে বেশি ভয় করি, তাহলো ছোট শিরক। সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ছোট শিরক কী? তিনি জবাব দিলেন, রিয়া।
আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন যখন মানুষকে তাদের আমলের বিনিময় দেবেন, তখন রিয়াকারীকে বলবেন, যাও দুনিয়ায় যাদের তোমরা তোমাদের আমল দেখাতে, দেখো তাদের নিকট কোনো সওয়াব পাও কি না?’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৩৬৮১)
আ.দৈ/এআর