দিনের পর দিন অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না। সংস্কার নিয়ে কমিশন কাজ করছে ভালো কথা। সংস্কার নতুন কোনো ধারণা নয়। সংস্কার নিয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু দেশে যে অস্থিরতা চলছে, তা অনেকটা কমে যাবে যদি নির্বাচিত সরকার থাকে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে বিএনপি। আর জুলাই বিপ্লবে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিয়েছে। আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। গুম, খুন, বিনা বিচারে হত্যা এটা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে।
তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য সরকার কয়েকটা কমিশন করেছে। আমরা তাদের ভালো করে চিনি, সম্মান করি। এই কমিশন কাদের সঙ্গে কাজ করছে? আপনারা জনগণের কাছে যান, তারা কী চায় জানুন। দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকার থাকা উচিত নয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যের জনমনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়টিকে এভাবে না বলে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে তার পর সামনে আনতে পারলে ভালো হতো, কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না। এটা নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে, এই বিষয়টা তাদের ওপর ছেড়ে দিন। যদি ভোটারের বয়স এক বছর কমাতে চান, তাহলে সেটা নির্বাচন কমিশন প্রস্তাব করুক। এটা না করায় এখন তো আরও বেশি করে মানুষ আশাহত হবে। এটা করতে গিয়ে আরও সময় যাবে। মানুষের মধ্যে একটা ধারণা হচ্ছে, এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করছে– এটা সঠিক নয়।
দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন আছে এবং আমরা চাই তারা সফল হোক। এ জন্য সব রকম সহযোগিতা করতে আমরা তৈরি আছি। সবচেয়ে বেশি অনুরোধ করব, দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তা না হলে সমস্যা ও সংকট বাড়তেই থাকবে। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বলেন, বর্ডার সমস্যা বলেন, সাবোটাজ করার যেসব ঘটনা হচ্ছে, এগুলো কমানো যাবে না।
এখনও মানুষ স্তস্তি পায়নি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার তো সবাই চায়। কিন্তু জনগণ স্বস্তি চায়। বাজারে স্বস্তি চায়, নিরাপত্তার স্বস্তি চায়। ব্যাংকের সব টাকা লুট করে নিয়ে চলে গেল তাদের বিরুদ্ধে তো একটা মামলাও হলো না। তবে এখন আগের মতো গায়েবি মামলা চলছে। আবার একটা বাণিজ্য করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলো বন্ধ না করলে আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) যে জায়গায় পৌঁছাতে চাচ্ছেন, সেখানে পৌঁছাতে পারবেন না।
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আ. দৈ/ আফরোজা