কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী করলেন ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক জিওফ্রে হিন্টন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আগামী দশকের মধ্যে মানব জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।
এআই প্রযুক্তি তৈরিতে নিজের ভূমিকা নিয়ে দুঃখও প্রকাশ করেছেন চলতি বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়া অধ্যাপক হিন্টন। তিনি এর দ্রুত বিকাশকে শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তুলনা করেছেন। সতর্ক করে দিয়েছেন, যন্ত্রগুলো নিয়ন্ত্রণ (আমাদের) নিয়ে নিতে পারে। আমার ধারণার চেয়েও দ্রুত এই প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে।
৭৭ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী এআই প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে হিন্টন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তিন দশকের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানবজাতির পতনের কারণ হতে পারে, এমন সম্ভাবনা মাত্র ১০ শতাংশ।
তবে তিনি সেই সম্ভাবনাকে আরও বেশি এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। বিবিসি রেডিও ফোরের ‘টুডে’ প্রোগ্রামে তিনি এখন বলছেন, ‘আসলে তা নয়। আমার মনে হয় ১০ থেকে ২০ বছর! কেননা আমাদের আগে কখনো নিজের চেয়ে বুদ্ধিমান জিনিসগুলোর সাথে মোকাবিলা করতে হয়নি।’
আপনি কয়টি উদাহরণ জানেন যে, বেশি বুদ্ধিমান জিনিস কম বুদ্ধিমান জিনিস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়? উদাহরণ খুব কমই আছে।
১৯৮০-এর দশকে অধ্যাপক হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডেটার বৈশিষ্ট্য খুঁজে বের করতে পারে এবং ছবিতে নির্দিষ্ট উপাদান সনাক্ত করতে পারে। এটি মূলত আধুনিক এআইয়ের ভিত্তি ছিল।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এটি শিল্প বিপ্লবের মতো। শিল্প বিপ্লবে, মানুষের শক্তি কম প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল, কারণ মেশিনগুলো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। যদি আপনি এখন একটি গর্ত খনন করতে চান, তবে একটি মেশিন দিয়ে খনন করবেন। কিন্তু আমরা এখন যা পেয়েছি (এআই) তা হলো এমন কিছু, যা মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে প্রতিস্থাপন করছে।
এর আগেও এই অধ্যাপক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, এআই সাধারণ মানুষের জীবনকে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করবে, ঠিক যেমন শিল্প বিপ্লব করেছিল।
তিনি বলেন, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতে কী হবে তা নির্ভর করবে ‘আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা এই প্রযুক্তি দিয়ে কী করে’ তার ওপর।
যদিও এটি উত্পাদনশীলতা ব্যাপক বাড়াবে, তবে আমার উদ্বেগ হচ্ছে যে, এটি সমাজের জন্য খুব খারাপ হতে পারে, যদি সমস্ত সুবিধা ধনীদের হাতে চলে যায়।
শুধু তাই নয়, তিনি মনে করেন, এতে অনেক লোক তাদের চাকরিও হারাবে। অনেকে আরও দরিদ্র হয়ে যাবে।
আ.দৈ/এআর