রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হলো ‘এয়ারপোর্ট ইমার্জেন্সি এক্সারসাইজ’। বিমানবন্দরে জরুরি পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করতে হয়, মঙ্গলবার সকালে সেই মহড়াই দিয়েছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার প্রশিক্ষিত সদস্যরা।
আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় একটি উড়োজাহাজে বোমা বা বোমা সদৃশ বস্তু নিরাপদে সরিয়ে নেয়া এবং বোমা নিষ্ক্রিয় ও যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধার করার প্রক্রিয়ার একটি কল্পিত দৃশ্যে তৈরি করে মহড়াটি অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধি অনুযায়ী প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাইজ্যাক, অগ্নিনিরাপত্তা, বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা যাচাই ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি দুই বছর পরপর এই ধরনের মহড়া বা অনুশীলেনের আয়োজন করা হয়।
তারই অংশ হিসেবে আজকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মহড়ার আয়োজন করে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
মহড়ার দৃশ্যে দেখা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারে বার্তা আসে যে, একটি এয়ারক্রাফ্টে বোমাজাতীয় বস্তু রয়েছে। পরে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এই বার্তা বিভিন্ন সংস্থাকে দ্রুত জানান। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি প্রতিরোধ প্রক্রিয়া শুরু করে।
বোমা উদ্ধার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বিভিন্ন সংস্থার প্রায় দুই শতাধিক প্রশিক্ষিত সদস্য অপারেশন পরিচালনা করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ওই এয়ারক্রাফট থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিট বোমা সদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করার পর নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করা হয়। পুরো মহড়াটি দেখেন উপস্থিত অতিথিরা।
মহড়ায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বেবিচক, বিমান ও সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, এপিবিএন, ডিএমপি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, কুর্মিটোলা হাসপাতাল, জাহান আরা হাসপাতাল, র্যাব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ বেসরকারি দুই বিমান সংস্থা একযোগে অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মহড়ার সব অংশীজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এভসেক সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে আইসিএওর নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন ও মহড়া বাস্তবায়ন করে আসছেন। প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ এবং নিয়মিত মহড়া।
তিনি বলেন, আইকাও এর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে মহড়ার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। আজকের মহড়ায় অল্প সময়েই কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হয়েছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। সবাই সম্মিলিতভাবে দ্রুত কাজ করায় পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে।
অংশীজনদের প্রস্তুতি ও দক্ষতা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আজকের মহড়ায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি সংস্থার পারফরম্যান্স অত্যন্ত প্রশংসনীয়। মহড়া অনুষ্ঠানে বেবিচক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনসহ বিভিন্ন অংশীজন, বেবিচকের ঊর্ধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আ. দৈ// আফরোজা