ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের শনাক্তে দেশব্যাপী তৎপরতা শুরু হয়েছে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, আসামসহ একাধিক রাজ্যে চলছে এই অভিযান। পাশাপাশি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের আটক করার পর পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সীমান্ত নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
মহারাষ্ট্রে অভিযান ও গ্রেপ্তার:
মহারাষ্ট্র পুলিশের তথ্যমতে, গত দুই দিনে অভিযান চালিয়ে থানে এলাকা থেকে আট বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বয়স ২২ থেকে ৪২ বছরের মধ্যে। কেউ ভাঙারি ব্যবসা, কেউ শ্রমিক আবার কেউ রাজমিস্ত্রি ও কলমিস্ত্রির কাজ করতেন। তারা ভারতে থাকার জন্য কোনো বৈধ নথি দেখাতে পারেননি।
ত্রিপুরায় গ্রেপ্তার:
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে তিন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগ রয়েছে। আগরতলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের আটক করা হয়।
কেরালায় সতর্কতা:
কেরালায় কাজের লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে প্রবেশ করানোর অভিযোগ নতুন নয়। তবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর এই রাজ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যদিও সোমবার কেরালায় কোনো গ্রেপ্তার হয়নি।
আসামের অভিযান:
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, সোমবার ছয় অবৈধ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "আসামে অবৈধ অনুপ্রবেশ কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।"
পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা:
পশ্চিমবঙ্গের দুই বিধানসভা এলাকায় ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই সদস্য। তাদের একজন, মোহাম্মদ শাদ রাডি, আধার কার্ড থেকে পাসপোর্ট পর্যন্ত জাল নথি তৈরি করেছিল।
সীমান্ত নজরদারি:
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায় ১,৮৮৫ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিএসএফ নজরদারি বাড়িয়েছে। গত জুলাই-আগস্টে সীমান্তে তৎপরতা আরও জোরদার হয়। বিএসএফের মতে, আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১৭০ জনের বেশি অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের অধিকাংশকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ভারতজুড়ে অবৈধ বাংলাদেশি শনাক্ত ও সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের এই পদক্ষেপ মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সীমান্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনারই অংশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আ. দৈ./ সাধ