নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া সিদ্ধার্থ সেনগুপ্ত পরিচালিত ‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’র দ্বিতীয় মৌসুম দারুণ সফলতা পেয়েছে। চলতি বছর মুক্তি পেয়েছে মির্জাপুর-এর তৃতীয় কিস্তিও। জোড়া সাফল্যে দারুণ উৎফুল্ল শ্বেতা।
আলাপের শুরুতেই বললেন, আমি যেখানেই যেতাম, সবাই প্রশ্ন করত, “ইয়ে কালি কালি আঁখে ২” কবে আসবে? তাই আমরা একটু চাপেই ছিলাম। এসব আমাদের জীবনের অংশ। সবাই প্রচণ্ড পরিশ্রম করছি। তার ফল পাচ্ছি। দর্শকের থেকে প্রশংসাসূচক মন্তব্য পাচ্ছি। আর কী চাই।
‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’র দুই মৌসুমের মধ্যে লম্বা সময়ের ব্যবধান। এই সিরিজের ‘শিখা’ হয়ে উঠতে আগের মৌসুম আবার দেখেছিলেন বলে জানান শ্বেতা। তাঁর কথায়, “মির্জাপুর ৩”-এর সময়ও আমি আগের দুটি মৌসুম দেখেছিলাম। এই সিরিজের ক্ষেত্রেও তা-ই করেছি। আমার অভিনীত চরিত্রের শারীরিক ভাষা, কণ্ঠস্বর ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য আমি আগের কিস্তি দেখতে পছন্দ করি। নতুন মৌসুমে চেষ্টা করি আগের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নিতে।
ওটিটি আসার পর প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে। অভিনয়ের ময়দানে শ্বেতা প্রতিযোগী হয়ে উঠতে কতটা পছন্দ করেন?
হেসে তিনি জবাব দেন, প্রতিযোগিতায় আমি বিশ্বাসী নই, তবে মাঝে মধ্যে খুব হিংসা হয়। কখনো কখনো অন্য কারও অভিনীত চরিত্র দেখে আমার খুব হিংসা হয়। মনে হয়, আমি যদি ওই চরিত্রে অভিনয় করতে পারতাম! তবে পুরুষ অভিনেতাদের চরিত্রগুলো দেখে বেশি হিংসা হয়। এই যেমন ধরুন, এই সিরিজে তাহির (রাজ ভাসিন) যে চরিত্রে অভিনয় করেছে, সুযোগ পেলে আমি এ রকম চরিত্রে অভিনয় করতে চাইবো। অভিনেত্রীদের এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ আসে না।
এই সাক্ষাৎকারে মানুষের মনঃসংযোগ ক্রমে কমে যাচ্ছে বলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন শ্বেতা। তাঁর কথায়, মানুষের এখন ধৈর্য কম। কোনো জিনিসের প্রতি এখন মনোনিবেশ করতে পারেন না মানুষ। ওটিটিতে কোনো ছবি বা সিরিজ দেখার সময় হাতে মুঠোফোন নিয়ে রিলস দেখতে থাকেন। সহজে সবাই একটা স্ক্রিন থেকে অন্য একটা স্ক্রিনে চলে যান। মানুষের মন ক্রমাগত যেন ছুটছে, আর বড়ই অস্থির।
আড্ডার শেষ বেলায় উঠে আসে সফলতার কথা। এ প্রসঙ্গেও ভিন্ন মত প্রকাশ করেন শ্বেতা। অভিনেত্রী বলেন, এখন সফলতাকে আমাদের সমাজই নির্ধারণ করে দেয়। যোগ্যতা বা কী অর্জন করেছেন, তা এখন সফলতার মাপদণ্ড নয়। আপনার দামি পোশাক, নামীদামি গাড়ি, বাড়ি- এসবের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এখন সফলতার সংজ্ঞা। আমরা অন্ধ হয়ে যেতে বসেছি। ভুলে যাচ্ছি যে আমরা অভিনয়শিল্পী। আমার কাছে সবচেয়ে জরুরি নিজের প্রতিভাকে আরও ধারালো করা। আর কোনো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলে সেটা মনপ্রাণ ঢেলে করা।
শ্বেতা কথায়-কথায় জানান, সিরিজের পর এবার সিনেমা হিসেবে আসছে ‘মির্জাপুর’, যেখানে বেশির ভাগ চরিত্রে আগের পাত্র-পাত্রীদেরই দেখা যাবে।
আদৈ/এআর