যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু’র নাম বদলে যাবার কথা জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব। আগামী বছরের শুরুর দিকে এ সেতু উদ্বোধনের বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
ইতোমধ্যে ওই নাম বাতিল করে গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেন, নতুন নাম চূড়ান্ত না হলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার স্ব-স্ব এলাকার নামেই বিভিন্ন স্থাপনার নাম দিতে আগ্রহী। যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত রেল সেতুটির ক্ষেত্রেও তা-ই হতে পারে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে সেতুর পশ্চিমপাড় এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সচিব এসব কথা বলেন।
১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হবার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেয়া হয়।
পরবর্তী পর্যায়ে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে থাকে। গতি কমের কারণে সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি একের পর এক ঘটতে থাকে শিডিউল বিপর্যয়, বাড়তে থাকে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে তৎকালীন আ’লীগ সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলওয়ে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৬ হাজার ৭৮১ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা।
২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যমুনা নদীর ওপর পূর্বে নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু’ নাম দিয়ে দেশের দীর্ঘতম ডুয়েল গেজ ডবল লাইনের এই সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্মাণ ব্যয়ের মধ্যে ৭২ ভাগ অর্থ ঋণ দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-জাইকা। জাপানের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তিনটি প্যাকেজে সেতু নির্মাণের কাজ করছে। নতুন রেল সেতু চালু হলে ডবল লাইনে দ্রুত গতিতে মালবাহীসহ ৬৮টি ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি রেলপথে আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি হবে।
আজ শুক্রবার সেতু পরির্দশনে গিয়ে রেলপথ সচিব বলেন, আগের সেতুর ওপর দিয়ে কম গতিতে ট্রেন চলত। ফলে সময় বেশি লাগত। নতুন এই সেতু চালু হলে প্রতিটি ট্রেন দ্রুত গতিতে চলতে পারবে। আগামী বছরের শুরুর দিকে এ সেতু উদ্বোধনের বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
ইতোমধ্যে সেতুর ৯৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, এ প্রকল্পে কোনো অর্থ সাশ্রয় হয়েছে কি না তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরে সেতুর পূর্বপাড় এলাকা পরিদর্শনে যান রেলপথ সচিব।
এ সময় প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান ও সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলামসহ পদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন।
আ. দৈ/ সাম্য