রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলোভ এবং তার সহকারীকে হত্যার ঘটনায় ২৯ বছর বয়সী এক উজবেক নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়ান পুলিশ।
দেশটির নিরাপত্তা বিভাগকে উদ্ধৃত করে বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার ভোরে রাশিয়ার বায়োলজিক্যাল ও কেমিক্যাল ডিফেন্স ফোর্সের (এনবিসি) প্রধান কিরিলোভকে একটি আবাসিক ভবনের বাইরে হত্যা করা হয়। একটি বৈদ্যুতিক স্কুটারে লুকানো বিস্ফোরক দিয়ে এ হামলা চালানো হয়।
রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষেবার (এফএসবি) দাবি, সন্দেহভাজন উজবেক নাগরিকের সঙ্গে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সম্পৃক্ততা রয়েছে। আটক ব্যক্তিকে 'সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে' তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বীকার করেছেন যে, তাকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এই কাজের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
ইউক্রেনের স্বীকারোক্তি
বিবিসির এক সূত্র জানায়, ইউক্রেন ইতিমধ্যেই কিরিলোভকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সূত্রটি জানায়, কিরিলোভ রাশিয়ার কেমিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল ডিফেন্স ফোর্সের প্রধান ছিলেন। ইউক্রেনের মতে, তিনি যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিলেন, তাই তাকে টার্গেট করা ন্যায্য। হত্যার একদিন আগে, সোমবার, ইউক্রেন কিরিলোভকে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য অভিযুক্ত করে। তবে, রাশিয়া ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
হত্যার পরিকল্পনা ও পুরস্কার
এফএসবি আরও জানায়, কিরিলোভকে হত্যার বিনিময়ে আটক ব্যক্তিকে ১ লাখ ডলার পুরস্কার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে যাওয়ার সুযোগের 'গ্যারান্টি' দেওয়া হয়েছিল।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ইউক্রেনের নির্দেশে মস্কোতে প্রবেশ করে একটি হাতে তৈরি বিস্ফোরক সংগ্রহ করেন। এরপর কিরিলোভের বাড়ি নজরদারি করতে একটি গাড়ি ভাড়া করেন এবং ইউক্রেনের ডিনিপ্রো শহরে ভিডিও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের জন্য একটি গোপন ক্যামেরাও স্থাপন করেন। কিরিলোভ যখন বাড়ি থেকে বের হন, তখন সন্দেহভাজন ব্যক্তি বোমা বিস্ফোরণ ঘটান।
রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বে সবচেয়ে বড় ক্ষতি
রাশিয়ার অভ্যন্তরে সামরিক ব্যক্তিদের মধ্যে কিরিলোভ সবচেয়ে উচ্চপদস্থ ব্যক্তি, যিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ইউক্রেনে হামলার পর থেকে এই প্রথমবার কোনো শীর্ষস্থানীয় রুশ সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হলো। এর আগে, যুক্তরাজ্য কিরিলোভের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য দায়ী।
সূত্র: বিবিসি
আ. দৈ./ সাধ