শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫,
৫ মাঘ ১৪৩১
ই-পেপার

শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
গণমাধ্যম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ২ বছর রাখার পক্ষে পত্রিকার সম্পাদকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Tuesday, 3 September, 2024, 7:09 PM  (ভিজিট : 93)

দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকরা অন্তর্বর্তী সরকারকে ন্যূনতম দুই বছর রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সম্পাদকগণ সংবিধানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন এবং সাংবাদিকদের যখন তখন হয়রানী বন্ধ এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যত্রতত্র খুনের মামলা বন্ধ করতে বলেছেন। আজ মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাত করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ২০ জন সম্পাদক। 

বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ে তারা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকার যেন যৌক্তিক সময় পর্যন্ত থাকে। এ যৌক্তিক সময়টা আসলে কতটুকু? এ বিষয়ে ড. ইউনূস দেশের শীর্ষ সম্পাদকদের কাছে জানতে চান।

শফিকুল আলম জানান, বিভিন্ন রকম কথা এসেছে, সর্বনিম্ন যে সময়টা এসেছে, সর্বনিম্ন দুই বছর যেন এ অন্তর্র্বতী সরকারের মেয়াদ হয়। অনেকে আবার দুই থেকে তিন বছরের কথা বলেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে সম্পাদকদের বেশির ভাগই বলেছেন, যেসব এজেন্ডার বাস্তবায়ন বা যে কাজটা অন্তর্বর্তী সরকার করবে, তা-ই আসলে নির্ধারণ করবে এ সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ প্রসঙ্গে সম্পাদকদের বক্তব্যে নানা পরামর্শ উঠে আসে। তন্মধ্যে সংবিধান সংশোধন, সংবিধান নতুন করে লেখা, আইন কমিশন, সংবিধান কমিশন, মিডিয়া কমিশন, পুলিশের জন্য কমিশন, পুলিশকে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায়, নির্বাচন কমিশন সংস্কারের কথা এসেছে। সেইসাথে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন সম্পাদকরা। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটি মস্ত বড় সুযোগ, বাংলাদেশের জন্য, আমাদের সবার জন্য। রাষ্ট্র মেরামত করার জন্য। বাংলাদেশকে নতুন শিখরে নেওয়ার জন্য। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের যে সুযোগ দিয়েছে, তাকে কাজে লাগাতে হবে।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদকদের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের দোষ-ত্রুটি নিয়ে লেখার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, আপনারা লিখবেন, প্রচুর লিখুন, আপনারা জানান। আমাদের যদি দোষ-ত্রুটি থাকে, সেগুলো নিয়েও আপনারা বলুন। আমরা আপনাদের কাছ থেকে শুনতে চাই। এসময় ড. ইউনূস বারবার বলেছেন, তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন এবং ভাইব্রেন্ট মিডিয়া দেখতে চান।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সম্পাদকরা বলেছেন, মিডিয়াতে যেসব কালা কানুন আছে, সেগুলো যাতে বাদ দেয়া হয়, সংশোধন করা হয়। এসময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে গিয়ে যাতে কোনো সাংবাদিক কোনো অসুবিধায় না পড়েন, সে বিষয়ে একটা মিডিয়া কমিশন করার প্রস্তাব এসেছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

এছাড়া যমুনার সামনে সাংবাদিকের কাছে বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের নিপীড়নের জন্য যেসব আইন ও ধারা আছে সেগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কালো আইন সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন তিনি সম্পূর্ণ স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করেন। অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনায় ভুল ত্রুটি হলে নির্দ্বিধায় সংবাদ উপস্থাপন করতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

মাহ্ফুজ আনাম বলেন, মিডিয়া নিষ্পেশনের জন্য কালাকানুন বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, এ ধরনের আইন, অ্যাটলিস্ট এই মুহূর্তে যেন ঘোষণা দেয়া হয় যে, এই আইনগুলোতে সাংবাদিকদের নিপীড়নের যে ধারাগুলো আছে এগুলো কার্যকর হবে না এবং এটার রিফর্মটা ওনারা সময় নিয়ে করবেন।

 এখানে আরও প্রস্তাব এসেছে যে, কনস্টিটিউশনাল রিফর্ম এখানে প্রধান উপদেষ্টা যদি মনে করেন, এর জন্য একটি গ্রুপ করে দিয়ে বা কমিটি করে দিয়ে সব ধরনের আইনের পরিবর্তন জুডিশিয়ারির ইনডিপেনডেন্স, পুলিশ রিফর্ম, এগুলোর সব কিছু একটি গ্রুপের কাছে বা বিভিন্নভাবে হতে পারে। অর্থাৎ এগুলো আমরা পরিবর্তন চাই, গণতান্ত্রিক রিফর্ম চাই, যোগ করেন তিনি। 

মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ড. ইউনূস আমাদের বলেছেন যে, ওনি সম্পূর্ণ রূপে স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করেন। আমাদের কাছে ওনার বিশেষ আবেদন হচ্ছে- আমরা যেন আমাদের লেখনীর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের আহ্বান করেছেন যে, এই সরকার পরিচালনার সব ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি যেন আমরা ধরিয়ে দেই। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ওনি বলেছেন, এই সরকারের ভুল-ত্রুটি হলে আমরা যেন নির্দ্বিধায় কাগজে ছাপি এবং এই সরকারকে সাহায্য করি, বলেন সম্পাদক পরিষদ সভাপতি।
 
মাহফুজ আনাম বলেন, আলোচনার মধ্যে এসেছে, আমরা চাই একটি জাতীয় ঐক্য স্থাপিত হোক। আমরা বলেছি, আমরা এই সরকারের কাছ থেকে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আশা করছি। সেই সংস্কারের মধ্যে সংবিধান পরিবর্তন, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলো দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন রিফর্ম করে সত্যিকার অর্থে গণমুখী সংস্থা এবং বিশেষত নির্বাচন কমিশন যেন ভবিষ্যতে সমস্ত নির্বাচনে সত্যিকার অর্থে জাতির ও ভোটারদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটান এ রকম একটা সংস্থা চাই। তিনি বলেন, আরেকটি কথা বলেছি, বাসস, বিটিভি ও রেডিও, যেটা সরকারের নিয়ন্ত্রণে, এদের স্বায়ত্তশাসন দেয়া হোক। পেশাগতভাবে তারা যেন তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে।

আ. দৈ. / কাশেম/ ইকে টিপু
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

বড় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
নব্য দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা জামায়াত আমিরের
বিদায়ী সরকারের টিসিবির ৩৭ লাখ ফ্যামিলি কার্ডই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
আগামী বাজেট হতে পারে আট লাখ কোটি টাকার
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে নাগরিকদের মাঝে সংঘর্ষ; ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ১
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতারা গন সংযোগে ব্যস্ত
চায়না পোশাকে সয়লাব দেশ
দুদকের মামলায় বিএফআইইউয়ের মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার
দক্ষতা ও নিষ্টার পুরস্কার, দুদকের মহাপরিচালক-পরিচালক পদে পদোন্নতি
রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে: সালাউদ্দিন
গণমাধ্যম- এর আরো খবর
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : [email protected]
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝