যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইসিই) ভারতকে 'অসহযোগী' দেশগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোকে এমন দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যারা অভিবাসী প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় যথাযথ সহযোগিতা করে না। ভারতের পাশাপাশি এই তালিকায় আরও রয়েছে ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া এবং ভেনেজুয়েলা।
আইসিইর অভিযোগ, এই দেশগুলো সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ভ্রমণ নথি ইস্যু এবং নির্ধারিত সময়ে তাদের নাগরিকদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বৈধতার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অনেক ভারতীয় অভিবাসী নিজেদের অবস্থান বৈধ করার চেষ্টা করলেও এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত দীর্ঘ। বৈধতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দু-তিন বছর পর্যন্ত সময় লেগে যায়।
তবে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যার বিচারে ভারত খুব বেশি এগিয়ে নেই। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যায় ভারত ১৩তম স্থানে রয়েছে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের ৩৭,৯০৮ জন অবৈধ অভিবাসী রয়েছে, যা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে। অন্যদিকে, ২ লাখ ৬১ হাজার অবৈধ অভিবাসী নিয়ে শীর্ষে রয়েছে হন্ডুরাস এবং ২ লাখ ৫৩ হাজার অভিবাসী নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে গুয়াতেমালা।
কঠোর অভিবাসন নীতি কার্যকর হচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার পরিকল্পনা করেছেন। তার নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বৃহত্তম প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই প্রক্রিয়ার ফলে চূড়ান্ত প্রত্যর্পণ আদেশপ্রাপ্ত হাজার হাজার ভারতীয় অভিবাসীকেও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে। এর পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিয়ম কঠোর করার এই সিদ্ধান্ত অভিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা বৈধ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ভারতকে 'অসহযোগী' দেশের তালিকায় যুক্ত করা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি কার্যকর করার পরিকল্পনা ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্ককে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। একই সঙ্গে, বৈধ হওয়ার অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার ভারতীয় অভিবাসীর ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।
আ. দৈ./ সাধ