পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রোববার শম্ভু সীমানায় উত্তেজনার পারদ চড়ল আরও এক ধাপ। পুলিশের ছত্রভঙ্গের চেষ্টায় কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ এবং ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দেওয়ার ঘটনা আবারও সামনে এসেছে।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচিতে আজ রোববারও (৮ ডিসেম্বর) পুলিশের হাতিয়ার ছিল কাঁদানে গ্যাসের শেল। পাঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু সীমানা থেকে দিল্লির দিকে কৃষকেরা এগোনো শুরু করতেই কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। বিক্ষোভরত কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়। এর আগে, শুক্রবারও পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অন্তত ছ’জন কৃষক। আজও তিনজন আন্দোলনরত কৃষক অসুস্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষিঋণ মওকুফ, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবিতে দিল্লি অভিযানের ডাক দিয়েছে পঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষক সংগঠনগুলো। প্রথমে শুক্রবার এই কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। কিন্তু সে দিন পুলিশের বাধা পেয়ে পিছু হটেন কৃষকেরা। এরপর আজ তারা ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির ডাক দেন। সংযুক্ত কিসান মোর্চা (অরাজনৈতিক) এবং কিসান মজদুর মোর্চার পক্ষ থেকে ১০১ জন কৃষককে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দিল্লির উদ্দেশে মিছিল করার ডাক দেয় তারা।
কৃষকদের কর্মসূচির জন্য সকাল থেকেই শম্ভু সীমানায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। ব্যারিকেড করে রাখা হয় রাস্তা। কৃষকদের মিছিল সেই পথে এগোনোর চেষ্টা করতেই তাদের আটকে দেন পুলিশ। পুলিশের দাবি, ১০১ জন কৃষকের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যারা মিছিলে এসেছেন, তারা সেই ১০১ জনের কেউ নন বলে সন্দেহ হরিয়ানা পুলিশের। ফলে তাদের পরিচয়পত্র যাচাই করতে চান শম্ভু সীমানায় মোতায়েন থাকা পুলিশ। তা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় শম্ভু সীমানায়। বেশ কয়েক দফায় কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। যদিও আন্দোলনকারী কৃষকদের বক্তব্য, তারা শান্তিপূর্ণভাবেই মিছিল করতে এসেছেন। পুলিশ যদি পরিচয়পত্র দেখতে চায়, তারা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
শুক্রবারের ঘটনার পর রোববার আন্দোলনকারী কৃষকদের অনেকেই আগাম প্রস্তুতি নিয়ে আসেন মিছিলে। কারও মুখে মাস্ক, কারও চোখে বিশেষ ধরনের চশমা। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে পারে, সেই সম্ভাবনার আঁচ করেই এই প্রস্তুতি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যারিকেডের অপর প্রান্তে পুলিশকর্মীদের মাস্ক ও ধোঁয়া আটকানোর জন্য বিশেষ চশমা ব্যবহার করতে দেখা গেছে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে শুরু করলে প্রাথমিকভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান আন্দোলনরত কৃষকেরা। তবে শম্ভু সীমানা এখনও ছাড়েননি তারা।
পুলিশ আগেই জানিয়েছিল, আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি থাকবে। ফলে রোববারের অভিযান ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টির আশঙ্কা আগে থেকেই তৈরি হয়েছিল। এর আগে, গত মাসে ১৩ এবং ২১ তারিখও কৃষকেরা দিল্লি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে দিল্লি ঢোকার আগেই আটকে দেওয়া হয় তাদের। আজকের কর্মসূচি তাদের চতুর্থ বার দিল্লিযাত্রার প্রচেষ্টা।
আ. দৈ/ আফরোজা