রাষ্ট্রা মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক পিএলসির কোম্পানি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের চিহ্নিত সুবিধাভোগী ও আওয়ামী শ্লোগানধারীরাই ধাপে ধাপে গুরুত্বপূর্ণ
পদগুলোতে পুনরায় পদায়ন হচ্ছেন। এমনই ন্যাক্কার জনক ঘটনার নজির স্থাপন করেছেন উক্ত ব্যাংকে সেক্রেটারী পদে জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যাবস্থাপক মনসুরুল-উল হক মো: জাহাঙ্গীরকে দ্বিতীয় মেয়াদে তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে।
আর ঘটনায় প্রচন্ড ক্ষোভ এবং অসন্তোষ বিরাজ করছে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে। শুধু তাইনয়, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এবং দীর্ঘ দিনের সুবিধাভোগীরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদী কর্মকর্তা ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা শুরু করেছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদও প্রচার হয়েছে।
আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) আখতার ইমাম নামে এক কর্মকর্তাকে মারধোর করেছে জনতা ব্যাংকের সুবিধাভোগী কতিপয় সিবিএ নেতা। জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরারবর হামলাকারী আখতার ইমামের মোবাইল, নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সিবিএ নেতা রফিকুল ইসলাম শ্রমিক দলের নেতাসহ ২৪ জনের না ও পরিচয় উল্লেখ করেছেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যাবস্থাপক মনসুরুল-উল হক মো: জাহাঙ্গীর আওয়ামীপন্থী কর্তকর্তা হিসাবে গত পনর বছর দলীয় প্রভাব খাঁটিয়েয়ে পদোন্নতিসহ নানা সুবিধা ভোগ করেছেন।
২০২১ সালে অবসরে যাওয়ার পর তিনি যথারীতি দলীয় প্রভাব বিস্তার করে চুক্তিভিত্তিক কোম্পানি সচিব হিসাবে নিয়োগ বাগিয়ে নেন। যদিও কোম্পানি সচিব পদটি একজন রেগুলার মহাব্যবস্থাপকের পদ, তবু দলীয় প্রভাব বিস্তার করে তিনি অনিয়ম করে কোম্পানি সচিবের রেগুলার মহাব্যবস্থাপক পদটির বিপরীতে নিয়োগ নেন। এ বছর ডিসেম্বরে তার চুক্তিকাল শেষ হওয়ার আগেই বর্তমান পর্ষদকে প্রভাবিত করে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার জন্য সুপারিশ বাগিয়ে নেন।
এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ হন জাতীয়তাবাদী ও বৈষম্য-বিরোধী কর্মকর্তারা এবং জাহাঙ্গীর সাহেবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দেয়ার জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অনুরোধ জানান। এদের মুখ বন্ধ করার জন্য জনাব জাহাঙ্গীর তার নিয়োগের পক্ষে চাপ তৈরির জন্য অর্থের বিনিময়ে সিবিএ নেতাদের লেলিয়ে দেন। গত ০৩ ডিসেম্বর বিকালে ব্যাংকের কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক নেতা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী মো: রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কর্মচারী ইউনিয়নের কতিপয় সাবেক নেতা ও আওয়ামী সন্ত্রাসী সিবিএ কর্মচারী এবং ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ ভিত্তিতে নিয়োজিত লোক মিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০ জন ডিএমডি সচিবালয়ে প্রবেশ করে। ডিএমডি (প্রশাসন)-এর চেম্বারে প্রবেশ করে হট্টগোল করতে থাকে এবং চেম্বারে অবস্থানরত উপমহাব্যস্থাপক জনাব মো: মামুন-অর-রশিদ, এফটিডি ইম্পোর্টসহ অন্যান্য উপস্থিত সকল কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
তারা বলতে থাকে যে, ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক মনসূর-উল হক মো: জাহাঙ্গীরকে কোম্পানি সেক্রেটারী হিসাবে পুনরায় তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দিলে সবাইকে শায়েস্তা করা হবে বওে শাসায়। এ অবস্থায় ডিএমডির পার্সোনাল সেক্রেটারী চেম্বারে প্রবেশ করে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা মো: রফিকুল ইসলামকে থামানোর চেষ্টা করলে রফিকুল ইসলাম ও তাঁর অনুসারীরা এলোপাতারি কিলঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে। এ নিয়ে ব্যাংকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
আরো অভিযোগ উঠেছে, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সিবিএ নেতা রফিকুল ইসলাম শ্রমিক দলের নেতা হওয়া সত্ত্বেও গত ৫ই আগষ্টের পর থেকে ব্যাংকে নানা সুযোগে চাঁদাবজি করে যাচ্ছেন। চিহ্নিত আওয়ামীলীগপন্থীদেরকে অর্থের বিনিময়ে জাতীয়তাবাদী ফোরামে স্থান নেয়া, বদলীর ভয় দেখিয়ে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিকট চাঁদাবাজী এবং বদলী বানিজ্যে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদও প্রচার হয়েছে।
আ. দৈ. /কাশেম