২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে কুমিল্লায় যাত্রীবাহী একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় পুলিশের তৎকালীন আইজিপি শহীদুল হকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অরো দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কুমিল্লার সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত । রিমান্ডের অপর দুই জন হচ্ছেন- যুগ্মসচিব এ কে এম গোলাম কিবরিয়া মজুমদার ও আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিম।
আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লার সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা এ আদেশ দেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের পিপি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান গত সোমবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদেরকে ওই আদালতে হাজির করেন। ওইদিন আদালত তাদের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মশিউর আলম আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে তাদেরকে হাতকড়া পড়িয়ে বুধবার আদালতে হাজির করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের আরও দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু বলেন, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকসহ অপর দুই আসামির নিকট থেকে তথ্য পেতে ও তদন্তের স্বার্থে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১০ দিন করে রিমান্ডের জন্য পুনরায় আবেদন দাখিল করেন। শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
তবে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকসহ আসামিপক্ষের আইনজীবী এ এইচ এম আবাদ হোসেন বলেন, এ মামলার সঙ্গে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমরা আদালতে রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুরের দাবি জানিয়েছি। পরে আদালত পুনরায় তাদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় ৮ যাত্রী নিহত হন। ওই সময় দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করে চৌদ্দগ্রাম থানার তৎকালীন পুলিশ।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১১ সেপ্টেম্বর একই ঘটনায় কুমিল্লার আদালতে পাল্টা মামলার আবেদন করেন নাশকতা কবলিত ওই বাসটির মালিক চৌদ্দগ্রামের আবুল খায়ের। আদালতের আদেশে পরে চৌদ্দগ্রাম থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়।
এ মামলায় সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও চৌদ্দগ্রামের সাবেক এমপি মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, কুমিল্লার তৎকালীন পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনসহ ১৯০ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দেন।
আ. দৈ./ কাশেম