ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার আবার ক্ষমতায় আসতে পারে৷ যেসকল বুদ্ধিজীবীরা আন্দোলনের পক্ষে ছিল তারা সবাই বলেছে দেশে অবশ্যই ছাত্ররাজনীতি থাকা দরকার। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হলে গোপন তৎপরতার মাধ্যমে যারা রাজনীতি করে তারা সুবিধা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্ররাজনীতি ও ছাত্রদলের কার্যক্রমের নানাবিধ বিষয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার পারভেজ সহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হোক এটা আমরা চাই না, নির্বাচনের মাধ্যমে ভালো একটা সরকার আসুক এটা প্রত্যাশা করি এবং সুষ্ঠু রাজনীতি চাই। ছাত্রলীগের রাজনীতি দেখেছি সিট বাণিজ্য, জোর করে মিছিল মিটিং নিয়ে যাওয়া, হলে দখলদারিত্ব, ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য এবং র্যাগিং এগুলো করেছে। ছাত্রদলের নিকট প্রত্যাশা করি এগুলো যাতে না ঘটে এবং সুষ্ঠু রাজনীতি যেন প্রতিষ্ঠা করে।
ছাত্রদল সম্পাদক নাছির বলেন, ৫ই আগস্টের পর একটা নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়েছিল যে ছাত্র রাজনীতির দরকার নেই, ছাত্ররাজনীতি থাকলে ক্ষতি হবে। ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ৫ই আগষ্টের পরে ছাত্র রাজনীতি থাকবে না বলে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সময় বক্তব্য দিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে হঠাৎ করে বিভিন্ন কমিটিতে তাদের নাম আমরা অন্তর্ভুক্ত দেখতে পেয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কয়েকদিন আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আমরা এটি দেখতে পেয়েছি। এটাই আমাদের উদ্বিগ্নতার জায়গা তৈরি করেছে। সব ছাত্র সংগঠনের গোপন তৎপরতা ছেড়ে আত্মস্বীকৃত রাজনীতির প্র্যাকটিস করা উচিত। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছে।
বিভিন্ন ক্যাম্পাস ঘুরে কি দেখতে পেয়েছেন - জানতে চাইলে নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, আমি নিজেই একশোর বেশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়েছি, শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছি। তারা অতীত সময়ে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করেছে। ছাত্রদলের রাজনীতিকে কীভাবে আরো পরিশীলিত করা যায়, পরিশুদ্ধ ও কল্যাণমুখী করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে অনুরোধ করেছে যাতে জোর করে মিছিলে নেওয়া না হয় এবং গেস্টরুম কালচার যাতে ছাত্রদলের হাত ধরে ক্যাম্পাসে ফিরে না আসে। আমরা শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়েছি যে এরকম কোন কিছু ছাত্রদলের হাত ধরে আসবে না এবং তাদের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা যেমন কাজ করেছি, সামনেও সেভাবেই কাজ করব।
এদিন, ইবি শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করতে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ইবি থানা সংলগ্ন শহীদ জিয়াউর রহমানের স্থাপিত ভিত্তি প্রস্তরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধানিবেদন শেষে শহীদদের জন্য দোয়া করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও মতবিনিময় করেন।
আ. দৈ. / কাশেম/সাকিব