কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের বদরখালী ফেরীঘাট এলাকায় প্যারাবন নিধনের অভিযোগে নতুন করে ৪২ জনের বিরুদ্ধে নতুন মামলা করেছে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতর।
গত ২৩ অক্টোবর রাতে চকরিয়া থানায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলাটি রুজু করেছেন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তা মো: আবদুস ছালাম। চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাধ ও নদীর তীরে বাইন গাছ রোপনের মাধ্যমে প্যারাবন সৃজন ও বনায়ন সবুজ সৃষ্টিতে নিয়োজিত রয়েছেন এনজিও সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা (উবিনীগ)।
সংস্থাটির কক্সবাজারের আঞ্চলিক সমন্বয়ক জয়নাল আবেদীন খানের লিখিত আপত্তির মুখে আদালতের নির্দেশে সরেজমিন পুনঃতদন্ত করে পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজারের এ কর্মকর্তা বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় নতুন মামলাটি দায়ের করেছেন।
এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে অনেকে বদরখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন।মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর থেকে চলতি ২০২৪ সালের ১৩ জানুয়ারির মধ্যে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের বদরখালী বাজারের দক্ষিণে টুটিয়াখালী পাড়ার পশ্চিমে ১০ একর এবং বদরখালী- মহেশখালী সেতুর দক্ষিণে ২ একর প্যারাবন নিধন করে।
পরবর্তী সময়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বদরখালীতে সরেজমিন পরিদর্শন করে ১২ একর প্যারাবন নিধনের সত্যতা পেয়েছেন। মূলত মাছ ও কাঁকড়ার খেরের জন্য বাঁধ তৈরি করতে এসব প্যারাবন নিধন করা হয়। এরই জের ধরে ১৩ জানুয়ারি বদরখালী সেতুর দক্ষিণে সমুদ্র চ্যানেলের পূর্ব পাশে ২ ফুট উঁচু, ৫ ফুট প্রশ্ন ও ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাঁধ নির্মাণ করেন আসামিরা।
প্যারাবন নিধন করে শ্রমিকদের দিয়ে খালের ওপর বাঁধ নির্মাণের ফলে জলাশয়, পরিবেশ ও প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামির তালিকায় আছেন বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গোলাম কাদের ওরফে মনু, সাবেক ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহিম ছাড়াও বদরখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল কাদের, সাহাব উদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী চৌধুরী। মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সাবেক সম্পাদক ছিলেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুর কাদের ভূঁইয়া এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে প্যারাবন নিধনের ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বাদি হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে একটি মামলা করেছেন। এই মামলাটি কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তদন্ত করবেন বলে জানা যায়।
আ. দৈনিক /কাশেম /বিজন কুমার