চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় প্রবেশ এলাকার রাস্তায় ময়লার দুর্গন্ধ ও খানাখন্দে অসহনীয় পরিস্থিতি। বর্ডার বাজার নামের এ স্থানে রয়েছে প্রায় শতাধিক ছোটোবড়ো গর্ত। রায়পুর পৌরসভার বর্জ্য ফেলায় এখানকার পরিবেশেও ভাসছে নানান রোগের জীবানু। নিষিদ্ধ পলিথিন, ইলেকট্রনিক বর্জ্য সামগ্রী ফেলায় একেবারে ভরাট হয়ে পড়েছে রায়পুর-ফরিদগঞ্জ সড়কের পাশের চরপাতা খাল।
সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের ভয়াবহ বন্যায় পানি প্রবাহ বন্ধ ছিলো এই খালে। জলাবদ্ধতায় বিরূপ ভূমিকা রাখলেও ফেলনা বর্জ্য নিয়ে ডেম কেয়ার অবস্থানে রয়েছে রায়পুর উপজেলা ও পৌরসভা প্রশাসন। প্লাস্টিক ও অপচনশীল বর্জ্যের দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠতে শুরু করেছে এলাকাটি। মরা মুরগী, হাঁস, পশু-পাখিও ফেলা হয় এই বর্জ্যের স্তুপে।
ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন এখানকার প্রায় চার হাজার মানুষ। ভাঙা টিভির অংশ, ফ্রিজ, টিভির রিমোট, প্লাস্টিকের কার্পেট, মেলামাইনের থালা, প্লাস্টিকের ওয়ান টাইম প্লেট, গ্লাসসহ বিভিন্ন সামগ্রীর দেখা মেলে এখানে। নাক চেপে হাঁটলেও দুর্গন্ধ যেন জোরজবরদস্তি করে ঢুকে পড়ে শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে।
দুর্গন্ধের দরুন অসুস্থ হয়ে পড়ছে এখানকার নারী,শিশু,বৃদ্ধসহ সকল বয়সী মানুষ। উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের বুক জুড়ে এতোবড়ো বর্জ্যের স্তুপ নিয়ে প্রশাসনের হেডেক না থাকায় হতাশ বাসিন্দারা। নাগরিক সমাজ থেকে বারবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে দাবী তোলা হলেও কানে নেয় না সংশ্লিষ্টরা- উঠেছে এমন অভিযোগ। বর্জ্য ও দুর্গন্ধের সমস্যায় জর্জরিত হওয়ার পাশাপাশি পাশের সড়কের বিরাটকার গর্তগুলো দুর্ভোগ বাড়িয়েছে আরো কয়েকগুণ। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যাতায়াতে গত দশমাসে আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে কোমড়ের হাড়ে আঘাত পাওয়া বৃদ্ধ ও বয়োবৃদ্ধ মানুষের সংখ্যাই বেশি। জীবনের পরোয়া না করে একদিকে দুর্গন্ধের সাথে বসবাস করছেন মানুষ অপরদিকে গর্তে ভরা রাস্তায় তাদের সড়কগতিও ধরাশায়ী।
পরিস্থিতি দেখে মানুষজন বলছেন, আঞ্চলিক এই মহাসড়কের বর্ডার বাজার এলাকা হয়েছে ময়লা ও গর্তের নগরীতে পরিনত। দুই জেলার সীমান্তবর্তী এ স্থানে ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণের হিড়িক ফেলে দিয়েছে রায়পুর পৌরসভা। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তি। অথচ দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হয়েও সেটি পারছে না রায়পুর পৌরসভা কতৃপক্ষ।
ফলস্বরূপ-চলাচলের ক্ষেত্রে পথচারী, যানবাহনের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা পোহাচ্ছেন সীমাহীন-অসহনীয় দুর্ভোগ। বর্জ্য স্তুপের দুর্গন্ধ এমন- পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হয় পাবলিক টয়লেট। দীর্ঘদিন যাবৎ এমন অবস্থা চলে আসলেও পৌরসভা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে নেয়নি চোখে পড়ার মতো কোনো উদ্যোগ। আবর্জনার কারণে ডাকাতিয়া নদীর সাথে সংযুক্ত চরপাতা ইউপির খালের পানি প্রবাহ যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।তেমনি বিষাক্ত পানি আটকে গিয়ে বর্ষাকালে করছে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি । আবার শুষ্ক মৌসুমে প্রকট হয়ে উঠছে দুর্গন্ধ।
হারুনর রশীদ নামে একজন বলেন, আঞ্চলিক এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। গর্তও রয়েছে এই অংশে। দুর্গন্ধ সহ্য সীমা পেরিয়ে গেছে। রায়পুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান খান বলেন, নতুন একটি জায়গার জন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। সড়কের ভাঙা অংশটি মেরামতে নির্দেশনা দিয়েছি। দুটোই অতিদ্রুত বাস্তবায়ন হবে।
আ. দৈ. /কাশেম/জিহাদ