কাপড় ধোয়ার মতো মানুষের শরীর ধুয়ে দেওয়ার ওয়াশিং মেশিন তৈরি করেছে জাপান। দেশটির ওসাকায় ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো’তে মেশিনটি প্রদর্শনীর পর বাজারে এখন এটি বেশ সাড়া ফেলেছে।
মেশিনটি তৈরি করেছে জাপানের প্রযুক্তি কোম্পানি সাইন্স। ক্যাপসুল আকৃতির ডিভাইসটির ভেতরে ঢুকতে পারবেন ব্যবহারকারী। ভেতরে যাওয়ার পর লাইট বন্ধ করে পুরো শরীর ধুয়ে দেবে এটি। এরসঙ্গে ভেতরে বসে গানও উপভোগ করা যাবে।
‘ভবিষ্যতের মানব পরিষ্কারকারী’ নামে এ মেশিনটির প্রতি মানুষের ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। ওসাকায় ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো’ ছয়মাস ধরে চলেছে। গত অক্টোবরে এই প্রদর্শনী শেষ হয়।
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র সাচিকো মাকোরা বলেছেন, এ মেশিনটি শুধুমাত্র মানবদেহকে পরিষ্কার করে না, এটি ‘আত্মাকেও ধুয়ে দেয়’। মেশিনটির ভেতরের সেন্সর ব্যবহারকারীর হার্টবিটসহ শরীরের অন্যান্য বিষয় পর্যবেক্ষণ করে।
মানুষের ব্যাপক আগ্রহ থাকায় সাইন্স নামের কোম্পানিটি এ মেশিন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে। তাদের প্রথম পণ্যটি কিনেছে ওসাকার একটি হোটেল। তারা অতিথিদের বিশেষ এ মেশিন ব্যবহারের সুযোগ দেবে।
সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমস জানিয়েছে, ইলেকট্রনিক্স পণ্যের খুচরা বিক্রেতা ইয়ামাদা ডেনকিও এই মেশিন কিনেছে। মূলত নিজেদের দোকানে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে এটি সংগ্রহ করেছে তারা। আগামী ২৫ ডিসেম্বর থেকে মেশিন প্রদর্শনী শুরু করবে কোম্পানিটি। এছাড়া সাধারণ মানুষকে এটির অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগও দেবে তারা।
এদিকে নতুনত্বের কারণে কোম্পানিটি মাত্র ৫০টি মেশিন বিক্রির জন্য তৈরি করবে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, একেকটি মেশিনের দাম প্রায় সাড়ে তিন লাখ ডলার হবে। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার সমান।
ক্যাপসুলে প্রবেশের পর ব্যবহারকারী ২ দশমিক ৩ মিটার লম্বা আবদ্ধ পডের ভেতর শুয়ে পড়বেন। এরপর এটি শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষ্কার করা শুরু করবে। মেশিনটি শরীর পরিষ্কারে ক্ষুদ্রাকৃতির বাবল এবং সূক্ষ্ম ঝরনা ব্যবহার করে। শরীর পরিষ্কারের সময় ভেতরে থাকা সেন্সর ব্যবহারকীরার স্বাস্থগত বিভিন্ন দিক ট্রেক করে।
ব্যবহারকারী যেন আরাম অনুভব করেন এজন্য ভেতরে মৃদু শব্দে গান বাজতে থাকবে। পরিষ্কার শেষ হওয়ার পরপর এটি শরীরকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শুকানো শুরু করে। ফলে কোনো তোয়ালে বা কাপড় লাগে না। সব প্রক্রিয়া শেষ করতে মোট ১৫ মিনিট সময় লাগে।