আওয়ামী লীগ সরকার গত ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশি দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এমপি মন্ত্রীসহ জেলা ও থানা পর্যায়ের এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়ে আছেন।
তারা ক্ষমতায় ঠিকে থাকার নিমিত্তে সারা বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে ছিল দলটির নেতা কর্মীরা। সেখানে গাজীপুরের সারদাগঞ্জ গ্রামের শিহাব নূর অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগের হয়ে। তার নামে জুলাইয়ের গণহত্যার মামলাও হয়েছে। যার প্রধান আসামী ফ্যাসিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গাজীপুরের সাবেক মেয়রের নিকট আত্মীয় পরিচয়ে এবং আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হিসেবে নিজেকে যাহির করতেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর একাধিক মামলা থেকে কৌশলে নিজেকে সেভ সাইডে রেখেছিলেন শিহাব নূর ।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর মামলা থেকে বাঁচার জন্য ইতিমধ্যেই বোল পাল্টিয়ে সেঁজেছেন বিএনপির কর্মী। তার মামা বিএনপির নেতা, সেই পরিচয় দিচ্ছেন এখন তিনি। অথচ শিহাব নূর গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে ছিল তার দহরম মহরম সম্পর্ক। আওয়ামী বিভিন্ন প্রোগ্রামেও দেখা যেত তাকে। সুযোগ সন্ধানী এই শিহাব নূর বহুরুপী চরিত্রের অধিকারী বলে লোকমুখে শোনা যায়।
জানা গেছে, শিহাব নুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পত্র জমা পড়েছে। অভিযোগে পত্র থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের আমলে শিহাব নুরের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মানবপাচার, নারীপাচার, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের মাধ্যমে বিপুল সম্পত্তির মালিক হন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের সাথে ঘনিষ্ঠতা থাকায় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলে উঠাবসা থাকায় অবৈধভাবে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই অর্থ দিয়ে নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তির মালিক বনে যায়।
অভিযোগে পত্র আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তার নিজ গ্রামের বাড়ী সারদাগঞ্জ এবং গাজীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় সম্পদের মালিক হয়ে হয়েছে। তার প্রমাণদি সংযুক্ত করা হয়েছে। পারিবারিকভাবে সৎচ্ছল না হলেও অবৈধ রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে রাতারাতি অবৈধ সম্পত্তির মালিক বনে যান। এছাড়া তিনি নিষিদ্ধ ত্রিপ্ট কারেন্সীসহ বিদেশী বহু প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত এবং অবৈধ লেনদেনের সাথেও জড়িত। দেশের বাইরে মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে বলে জানা যায়।
আরো উল্লেখ রয়েছে, বিভিন্ন ধনী পরিবারের সুন্দরী মহিলা এবং যুবতী নারীদের সাথে ঘনিষ্ঠতা করে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ধারন করে, পরবর্তীতে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ আছে, গাজীপুরের বিভিন্ন রিসোর্টে মাদক ও নারী সরবরাহ করে অর্থ আয় করেন তিনি। বিপুল পরিমাণের অর্থ অবৈধভাবে আয় করে বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ীসহ অন্যান্য বিপুল সম্পত্তির উৎস খুজে বের করে তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে আবেদন পত্রে।
এব্যাপারে শিহাব নুরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা। তিনি কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। এছাড়া আওয়ামী লীগের কোনো অনুষ্ঠানে যায়নি তিনি। তিনি বিএনপির কর্মী বলে দাবী করেছেন। ছাত্র জীবেন ছাত্র দলের সাথে জড়িত ছিলেন। তার এক মামা বিএনপির নেতা। এছাড়া তার পুরো পরিবার বিএনপি সমর্থক বলে দাবী করেছেন।
তিনি আরো জানান, তার কোনো অবৈধ সম্পদও অর্থ নেই। তিনি চাকরি করে একটা গাড়ি কিনেছেন। এছাড়া বর্তমান বাড়িটি তার বাবা তৈরি করেছেন বলে জানান তিনি।