এক বৃদ্ধার ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে মানবিকতার অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান। সখিনা নামের ওই বৃদ্ধার জমি প্রতারণার মাধ্যমে নিজের নামে লিখে নিয়েছিলেন তারই ছেলে। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করেও সমাধান না পেয়ে ন্যায়বিচারের আশায় দীর্ঘদিন ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান সখিনা। তিনতলা সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই জেলা প্রশাসকের নজরে পড়ে ঘটনাটি। তিনি দাঁড়িয়ে তাঁর কথা শোনেন এবং পরে নিজেই যান এলএ শাখায়। সব কথা শুনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। জমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জেলা প্রশাসকের (ডিসি) অফিস থেকে ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া ।সরকারি উদ্যোগ নিয়ে জমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে করে সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি মানবিকতার পরিচায় দিয়েছেন।
। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে জমি দখল, হয়রানি এবং অবৈধভাবে জবরদখলের মতো বিষয়। এছাড়া, ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছে হঠাৎ জেলা প্রশাসকের এভাবে মানবিক সাড়া দেওয়ায় কার্যালয়ে উপস্থিত অনেক ভুক্তভোগীই অবাক হন। বৃদ্ধার ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে ‘মানবিক ডিসি’ খেতাব দিয়েছে কক্সবাজারের জেলার সাধারন মানুষ।
শুধু সখিনা নন, কক্সবাজারের জেলা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন লোকজনের পাশে দাঁড়িয়েছেন মো. আব্দুল মান্নান। সহযোগিতার পাশাপাশি অনেককে অনুদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি।
সখিনা বলেন, ডিসি স্যার একজন অভিভাবক ও মানবিক নেতার দায়িত্ববোধ নিয়ে আমার কাজটি করে দিয়েছেল। মো. আব্দুল মান্নান কক্সবাজারের জেলায় যোগ দিয়েই দ্রুত জনবান্ধব প্রশাসক হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। কক্সবাজারের জেলার সাধারন মানুষরা জানান, মানুষের পাশে দাঁড়াতে এমন মানবিক জেলা প্রশাসকই প্রয়োজন। গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিভিন্ন দপ্তরে প্রশাসনিক পরিবর্তন আনা হয়।
আওয়ামী লীগ আমলের অনেক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এই সংস্কারের ফলে যেসব দপ্তরে আগে মানুষের ভোগান্তি ছিল, সেসব জায়গায় এখন তা কমেছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের মতো অন্যান্য জেলা প্রশাসকদেরও আরও মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান সচেতন মহল । স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদ–আহত পরিবার, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, দুস্থ মানুষ, অসহায় শিশু, কারাবন্দি, ঝুঁকিপূর্ণ রোগী—সবার ঠিকানা হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
কক্সবাজারের ডিসি মানবিক এবং বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। সুশৃংখল জনগণের আশানুরূপ পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে মো. আব্দুল মান্নান কক্সবাজারের নতুন জেলা প্রশাসক হিসাবে কর্মস্থলে যোগ দেন ।১৯৮৪ সালের ১ মার্চ কক্সবাজার মহকুমা থেকে জেলা হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ২৫ জন জেলা প্রশাসক দায়িত্ব পালন করেছেন।
২৭তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা আ. মান্নান এই জেলার ২৬তম জেলা প্রশাসক হিসেবে থেকে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। কক্সবাজার আসার আগে তিনি জাতীয় বেতন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রাইভেট সেক্রেটারি (উপ সচিব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।