নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকাল ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দীনের সঙ্গে এই বৈঠকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এ সময় দলটির পক্ষ থেকে চার দাবি জানানো হয়েছে।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের কাছে জামায়াত ইসলামের জানানো দাবিগুলো হল- পিয়ার পদ্ধতি চালু; প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ; জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে।
বৈঠক শেষে হামিদুর রহমান আযাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন আমাদের দলের নিবন্ধন ও দারিপাল্লা প্রতীক ফিরিয়ে দিয়ে ন্যায়বিচারের পথ সুগম করেছে। এটা প্রমাণ করে, অন্যায় দিয়ে ন্যায়ের উপর দীর্ঘদিন চাপিয়ে রাখা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়, দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা কেড়ে নেওয়া হয়। সেটি ছিল চরম অন্যায়। এখন আদালতের রায়ে ও গেজেটের মাধ্যমে সেই অধিকার আমরা ফিরে পেয়েছি।’ আদালতের আদেশ ও ইসির গেজেটকে ‘জনগণের প্রতিরোধ ও গণআন্দোলনের’ ফল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৈঠকে জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমাদের দাবি, জাতীয় নির্বাচনের আগে যেন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়। এতে ভবিষ্যতের জন্যও একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে।’
সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবও দিয়েছে জামায়াত। দলটি বলছে, এই পদ্ধতি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করবে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বহু দেশে এ পদ্ধতির (পিআর) মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশেও এটি চালু হলে কালো টাকার প্রভাব, সন্ত্রাসী তৎপরতা ও দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে। আমরা ১ শতাংশ ভোট-ভিত্তিক আসন বণ্টনের প্রস্তাব দিয়েছি, যাতে ভোটারের প্রকৃত মত প্রতিফলিত হয়।’
প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ প্রবাসী ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত মন্তব্য করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে যে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অবদান রাখছেন, তাদের ভোটাধিকার থাকা উচিত। আমরা পোস্টাল ভোট, অনলাইন ভোটসহ সম্ভাব্য প্রযুক্তিভিত্তিক পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছি।’
জাতীয় নির্বাচনে আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে হবে এবং তা নির্দলীয় সরকারের অধীনেই হতে হবে বলে জানান হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন, ‘এতে করে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে এবং জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আস্থা ও পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।’