ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ( সিইসি) এ কে এম নুরুল হুদা এবং সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গতকাল গ্রেফতারের পর ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আজ সোমবার তাদেরকে আদালতে হাজির করা হতে পারে।
গতকাল রোববার সন্ধায় রাজধানীর উত্তরায় স্থানীয় জনগণ সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এরপর গতকাল রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাবেক আরেক প্রধান কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র তাদের গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে বিএনপির পক্ষ থেকে গতকাল রোববার (২২ জুন) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর-১১। ওই মামলার ২৪ জন আসামি হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম. নুরুল হুদা ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়।
অপর আসামিরা হলেন, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মো. আব্দুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, তৎকালীন পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, তৎকালীন ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার, সাবেক ডিজি র্যাব ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিজিএফআই প্রধান (নাম অজ্ঞাত), সাবেক এনএসআই প্রধান ও সাবেক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল আলম, , নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমান ও তৎকালীন নির্বাচন সচিব (নাম অজ্ঞাত)।
মামলায় উর্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের দলীয় ও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ২০২৪ সালে নির্বাচন করে ‘আমি-ডামি ভোট’ উপাধি পায় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। ওই কমিশনের বেশিরভাগ কার্যক্রম নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ভোটের হার নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক তৈরি হয়। ভোটের দিন বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ ভাগ ভোট পড়ে বলে জানানো হলেও এক ঘণ্টার ব্যবধানে ভোটের হার ৪০ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য ভোটের হার ঘোষণার সময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথমে ২৮ শতাংশ ভোট পড়ার কথা বলে পরে তা সংশোধন করে ৪০ শতাংশের কথা বলেন।
যে কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি। একই মামলা অতীতে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সিইসি এ কে এম নুরুল হুদা ও এই তিন নির্বাচনে ‘জয়লাভ’ করা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নামেও করা হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর হাবিবুল আউয়াল লোকচক্ষুর অন্তরালে অবস্থান করছিলেন। গতকাল তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আ. দৈ./কাশেম