২০২৪ সালের ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এ শহীদ ও আহতদের স্মরণে ঢাকায় নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি স্মারক ‘গণমিনার’। সর্বস্তরের নাগরিকের অংশগ্রহণে এই মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ‘গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি’। প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।
গণমিনার নির্মাণের স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে রাজধানীর বিজয় সরণি ও বীর উত্তম মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান সড়কের মধ্যবর্তী সবুজ চত্বর। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, “৫ আগস্টের বিজয়ের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তব রূপ পেয়েছে। সরকারি হিসাবে ১৪০০ জন শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন হাজার হাজার। তাদের স্মৃতিকে স্থায়ী রূপ দিতেই এই গণমিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে গণচাঁদা তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
তিনি জানান, গণচাঁদা সংগ্রহের জন্য একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হবে, যেখানে যে কেউ অর্থ সহায়তা পাঠাতে পারবেন। চূড়ান্ত কাজ শেষ হতে সময় লাগবে। তবে আমরা চাচ্ছি, অন্তত ৫ আগস্টের মধ্যে একটি দৃশ্যমান কাঠামো দাঁড় করাতে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্থপতি কামার আহমাদ সাইমন বলেন, “আমরা সহজেই আমাদের ইতিহাস ভুলে যাই। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে—তাদের স্মরণে স্থায়ী কিছু থাকা দরকার। একটা হতে পারে জাদুঘর, আরেকটা হতে পারে মিনার।”
তিনি বলেন, “মিনারটি দুইটি উপাদানে গঠিত হতে পারে— একটি দেওয়াল, আরেকটি এপিটাফ (স্মরণফলক)। যেখানে শহীদদের নাম, জন্ম-মৃত্যুর তারিখ, পেশা, ও কোথায় শহীদ হয়েছেন— সেইসব তথ্য খোদাই করে রাখা হবে।”
গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে জমি বরাদ্দ, অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। এছাড়াও কমিটির গৃহীত অন্যান্য পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- জাতিসংঘ স্বীকৃত ১৪০০ শহীদের নাম ও পরিচিতি মিনারে খোদাই করে সংরক্ষণ, এই ভূখণ্ডে গত ২৫০ বছরের প্রতিরোধ ও সংগ্রামের চিত্র ও বার্তা তুলে ধরা, রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সকল মত-পথের মানুষের অংশগ্রহণে এটি একটি জাতীয় গণস্মারক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।