মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হলো, ইরানের আরাক পারমাণবিক চুল্লি এবং নাতাঞ্জ শহরের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল সরাসরি হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। বুধবার (১৮ জুন) রাতের এ হামলা ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বেড়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।
হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকা আরাক চুল্লি, যা প্লুটোনিয়াম উৎপাদনে সক্ষম এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। যদিও চুল্লিটি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়, তবে হামলা হয়েছে চুল্লির সেই অংশে, যেখান থেকে এটি পুনরায় সক্রিয় করার চেষ্টা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
নাতাঞ্জ শহরে অবস্থিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ও পারমাণবিক যন্ত্রাংশ তৈরির স্থাপনাও হামলার শিকার হয়েছে। এই স্থাপনাগুলোতে এমন প্রযুক্তি ও যন্ত্র রয়েছে, যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।
আইডিএফ জানায়, সর্বশেষ অভিযানে ৪০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং তারা ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, যন্ত্রাংশ তৈরির কেন্দ্র, আকাশ প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়।
হামলার আগেই আরাক ও খোন্দাব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য স্থান ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল আইডিএফ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় স্থানীয়দের দ্রুত সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ জানিয়েছে, হামলার আগে পারমাণবিক স্থাপনাগুলো খালি করে ফেলা হয়েছিল এবং বিকিরণের কোনো ঝুঁকি নেই।
নাতাঞ্জে আগেও একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) প্রধান কয়েকদিন আগেই বলেন, ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে থাকা সেন্ট্রিফিউজগুলো আংশিকভাবে হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, ইরান তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যা শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন নয়, বরং পরমাণু অস্ত্র তৈরির আশঙ্কাও বাড়িয়েছে।