শুক্রবার, ১ আগস্ট ২০২৫,
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
ই-পেপার

শুক্রবার, ১ আগস্ট ২০২৫
জাতীয়
লাইসেন্স ছাড়াই গভীর রাত পর্যন্ত ডিসকোর তালে চলে নাচ গান
নিয়ম নীতির তোয়াক্কা নেই রাজধানীর বারগুলোতে, অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি আছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Saturday, 31 May, 2025, 11:00 PM  (ভিজিট : 75)

রাজধানীতে অবস্থিত মদের বারগুলোর কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করছে না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় থানা পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বারগুলোতে চলছে অনিয়মের মহোৎসব। থোড়াই কেয়ার হচ্ছে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালার। আবার লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে অনেক বার। এসব বারে রাত হলেই চলে নাচ-গান। ডিসকোর তালে তালে মদের গ্লাস বা বোতল হাতে মাদক সেবীদের উন্মাদনা। রাত ৩টার পর অধিকাংশ হোটেল ও বারে ‘ক্লাব থার্টিন’ বন্ধ হলেও খুলে যায় অন্য জগৎ। যেখানে আড্ডায় বসেন ধনাঢ্য পরিবারের তরুণ-যুবকরা, বাদ যান না বয়স্করাও। অথচ বিকেল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বার চালু রাখার নিয়ম রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধিকাংশ বারে যেমন- নিয়ম নেই নাচ-গান বা ডিসকোর, তেমনি পারমিটধারী ছাড়া অন্য কারও নেই প্রবেশাধিকার। কিন্তু এই নিয়মের থোড়াই কেয়ার করছে হোটেল ও বারগুলো। অভিযোগ আছে, অধিকাংশ বারেই পারমিট কার্ড দেখা হয় না। বাংলা মোটরের ‘শেল’, তেজগাঁওয়ে ‘পিকক’, শাহবাগের ‘সাকুরা’, বনানীর ‘ব্লু মুন’, গুলশানের ‘লেকভিউ’, বনানীর ‘লোকই রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে’ সময় মানা হলেও কোনো মাদক সেবীর পারমিট কার্ড যাচাই করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুধু নিয়ম কানুন নয়। রাজধানীর  অনেক বারগুলোও আবার অগ্নিকান্ডের ঝুকিতে রয়েছে। অর্ধশতাধিক বারে অগ্নিনিরাপত্তার ছিটেফোঁটাও নেই। সাধারণ রেস্টুরেন্টের মতোই বারগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হচ্ছে রান্নাঘরে। আপৎকালীন জরুরি নির্গমন পথ নেই বেশিরভাগ বারে। এমনকি বারগুলোতে অ্যালকোহল মজুতের গুদামেও অগ্নিনিরাপত্তা অপর্যাপ্ত।

খোদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (নারকোটিক্স) সরেজমিন পরিদর্শনে বারগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তার এমন বেহাল চিত্র উঠে আসে। বেইলি রোড ট্র্যাজেডির পর রাজধানীর বারগুলো সরেজমিন পরিদর্শন শুরু করে নারকোটিক্স। এ প্রসঙ্গে  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেন, বার লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে ফায়ার সেফটিসহ আরও বেশ কয়েকটি লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়া ব্যবসা পরিচালনার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। বারগুলো যাতে নির্ধারিত সময় কঠোরভাবে মেনে চলে নারকোটিক্সের পক্ষ থেকে সেই তাগাদা দেয়া হচ্ছে।

নারকোটিক্সের সরেজমিন পরিদর্শনে রাজধানীর নামিদামি কয়েকটি মদের বারে অগ্নি নিরাপত্তার করুণ চিত্র বেরিয়ে আসে। এমনকি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অ্যালকোহল মজুতের গুদামেও পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা নেই। অথচ সাধারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় মদের বারে অতিরিক্ত অগ্নি সতর্কতা নেয়ার কথা। ফায়ার সার্ভিস বলছে, অতি দাহ্য অ্যালকোহল মজুতের কারণে এমনিতেই মদের বারে অগ্নিকাণ্ডের উচ্চ ঝুঁকি থাকে। উপরন্তু বারে ব্যাপকভাবে ধূমপান করা হয়।

 ফলে সাধারণ রেস্টুরেন্টের তুলনায় মদের বারে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কয়েকগুণ বেশি। আবার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অজুহাতে অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক বাইরে থেকে লাগিয়ে রাখা হয়, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সাধারণত বারে আগুন লাগলে প্রাণহানি বেশি হয়। বিশ্বের যেসব দেশে বার বা নাইট ক্লাবে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে সেখানে বহু প্রাণহানির নজির ভুরি ভুরি। উপরন্তু ঢাকায় বেশিরভাগ মদের বার বহুতল ভবনে। ফলে এ ধরনের ভবনের বারে আগুন লাগলে উদ্ধার তৎপরতায় বেগ পেতে হবে।

নারকোটিক্স বলছে, রাজধানীতে রেস্টুরেন্ট, ক্লাব ও আবাসিক হোটেল মিলিয়ে প্রায় শতাধিক মদের বার রয়েছে। এর মধ্যে রেস্টুরেন্ট ও ক্লাব বারের সংখ্যা সর্বোচ্চ। শর্তানুযায়ী বার লাইসেন্স পেতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ফায়ার সেফটি সনদসহ আরও বেশ কয়েকটি লাইসেন্স থাকতে হয়। কিন্তু মাঠ পরিদর্শনে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এমনকি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে হালনাগাদ ফায়ার সেফটি সনদ থাকলেও সেখানে আগুন নেভানোর প্রাথমিক উপকরণও মেলেনি।

নারকোটিক্সের তালিকা অনুযায়ী রাজধানীর অন্তত ৫০টি মদের বারে অগ্নিনিরাপত্তা অপর্যাপ্ত। এর মধ্যে রয়েছে পল্টন কালভার্ট রোডের ‘ঢাকা রেস্টুরেন্ট এন্ড বার’, মগবাজারের ‘পিয়াসী রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বার’, মিরপুর রোডের ‘হোটেল গ্যালাক্সি’, বাংলামোটর এলাকার ‘গোল্ডেন ড্রাগন’, প্রগতি সরণির ‘ডিম্পল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বার’, মহাখালীর ‘হোটেল জাকারিয়া’, ফার্মগেটের ‘হোটেল সালামার’, কাওরান বাজারের ‘হোটেল লা ভিন্সি’, বনানীর ‘হোটেল সারিনা’, ‘প্লান বি’, ‘হোটেল সুইট ড্রিম’, ‘লাকী রেস্টুরেন্ট এন্ড বার’, পল্টনের ‘হোটেল ফারস’, খিলক্ষেত এলাকার ‘হোটেল রিজেন্সি’, বিজয়নগরের ‘হোটেল ৭১’, উত্তরা এলাকার ‘লেক ভিউ রেস্টুরেন্ট এন্ড বার ও মার্গারিটা রেস্টুরেন্ট’।

খোঁজ নিয়ে জান গেছে, রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ অনেক দিনের। এখানে রাত যত গভীর হয় তত সেখানে আনাগোনা বাড়তে থাকে মাদক সেবীদের। চলে ভোররাত পর্যন্ত। সেখানে কারও পারমিট আছে কি না, তা দেখা হয় না। মানা হয় না সময়ও। শুধু এই পাঁচ তারকা হোটেল নয়, রাজধানীতে অবস্থিত কোনো বারই সময় ও নিয়ম মানছে না। 
সর্বোচ্চ বারের অনুমতি পাওয়া এ হোটেল রাত ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত নাচ-গান বা ডিসকোর তালে তালে মদের গ্লাস বা বোতল হাতে মাদকসেবীদের উন্মাদনা। রাত ৩টার পর হোটেলটির ‘ক্লাব থার্টিন’ বন্ধ হলেও খুলে যায় অন্য জগৎ। এর ষষ্ঠ তলায় চালু হয় সিসা বার। যেখানে আড্ডায় বসেন ধনাঢ্য পরিবারের তরুণ-যুবকরা, বাদ যান না বয়স্করাও। অথচ বিকেল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বার চালু রাখার নিয়ম।

অথচ বিধিমালা অনুযায়ী, ২১ বছরের নিচের কেউ মদ পানের পারমিট পাবেন না। মুসলিম হলে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদমর্যাদার চিকিৎসকের প্রত্যয়নপত্র লাগবে। হোটেল, রেস্তোরাঁয় অ্যালকোহল সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও পরিবেশনে অর্থাৎ বার স্থাপনে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে। কোনো এলাকায় ১০০ দেশি বা বিদেশি মদের পারমিটধারী থাকলে অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া যাবে আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘনে পিছিয়ে নেই রাজধানীর দিলকুশায় অবস্থিত একটি হোটেলও। সেখানে অশ্লীল নাচ ও গানের তালে তালে চলে মাদকসেবীদের মাতলামি।

 পিছিয়ে নেই পল্টন কাকরাইলঅবস্থিত কিছু পরি চিত বারও। অথচ কোনো বারেই নাচ-গানের নিয়ম নেই। রাজধানীতে অবস্থিত কোনো বারই সময় ও নিয়ম মানছে না। অথচ বিধিমালা অনুযায়ী, অ্যালকোহল আমদানি, রপ্তানি, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত করণ, সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণের জন্য পারমিট, লাইসেন্স বা পাস গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পানের জন্য পারমিট আর পরিবহনের জন্য পাস বাধ্যতামূলক।এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন বিধিমালা না থাকায় অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। পারফিউম স্যানিটাইজার তৈরিতে কিংবা শিল্পে ব্যবহৃত অ্যালকোহল খেয়েও মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

 দেশে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮’ থাকলেও কোনো বিধিমালা ছিল না। মূলত, ১৮৫৭ সালের ম্যানুয়াল বিধিমালা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তার দাবি, ‘বদলেছে সময়, মানুষও বেড়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নানা কারণে প্রচুর বিদেশি বাংলাদেশে আসছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে অ্যালকোহলের চাহিদা বাড়ছে। এই খাত থেকে সরকারের অনেক রাজস্ব আদায়ের সুযোগ আছে এবং তা নিয়েই এখন কাজ চলছে।’

আইন অনযায়ি পারমিট নিয়ে রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথে অ্যালকোহল পরিবহন করা যাবে। পারমিটধারী সদস্যরা ক্লাবের নির্ধারিত স্থানে বসে মদ পান করতে পারবেন। কোনো ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে ২০০ অ্যালকোহল পারমিটধারী থাকলে তাদের বার স্থাপনের লাইসেন্স দেয়া যাবে। সংখ্যা আরও বেশি হলে চাহিদার ৪০ শতাংশ অ্যালকোহল আমদানি করা যাবে। ইপিজেড, থিমপার্ক বা সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে যেখানে বিদেশি নাগরিক অবস্থান করবেন সেখানে বার স্থাপনের লাইসেন্স দেওয়া যাবে। হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, ক্লাব, ডিউটি ফ্রি শপ ও প্রকল্প এলাকায় নির্দিষ্ট সংখ্যক বার স্থাপনের লাইসেন্স দেওয়া যাবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ নিজ বাসায় মদ পান করতে পারবেন। বিদেশি মদ আমদানি বা রপ্তানির জন্য আবেদন করা যাবে। পর্যটন কর্পোরেশন, বার বা সরকারের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া কেউ অ্যালকোহল আমদানি করতে পারবেন না।

অথচ ‘অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০২২’এবং নতুন পাস হওয়া ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮’ এর তোয়াক্কা করছে না ঢাকার ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁর বারগুলো। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মেট্রো উত্তর এলাকায় ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১০৫টি বারের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্লাব ২১টি, রেস্টুরেন্ট ২৯টি ও হোটেল বার ৫৫টি। অন্যদিকে, ঢাকা মেট্রো দক্ষিণে ১৮টি বারের লাইসেন্স রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল বারের অনুমতি রয়েছে চারটির, রেস্টুরেন্ট তিনটি ও ক্লাব বার ১১টির।

হোটেল রিজেন্সির মতো পরিবেশ না হলেও আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘনে পিছিয়ে নেই রাজধানীর দিলকুশায় অবস্থিত হোটেল পূর্বানী’র। সেখানে অশ্লীল নাচ ও গানের তালে তালে চলে মাদকসেবীদের মাতলামি। পিছিয়ে নেই পল্টনের ফারস হোটেল। বাংলামোটরের শেল, তেজগাঁওয়ের পিকক, শাহবাগের সাকুরা, বনানীর ব্লু মুন, গুলশানের লেকভিউ, বনানীর লোকই রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে সময় মানা হলেও দেখা হয় না কোনো মাদকসেবীর পারমিট কার্ড মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো-দক্ষিণের এক কর্মকর্তা বলেন, সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সিসা বার বা লাউঞ্জ চলার নিয়ম। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে লেট ক্লোজিং লাইসেন্সের আওতায় অনুমতি নিয়ে ২টা পর্যন্ত চালানো যায়। সেখানে সফট মিউজিকের অনুমতি আছে। নাচানাচি বা ডিসকোর কোনো অনুমতি নেই। বারের সঙ্গে অনুমতি নেই স্পা সেন্টারেরও। বারগুলো নেগেটিভ কোনো কিছু করতে পারবে না। যেমন- দেহব্যবসা, ডিসকো প্রভৃতি।’

এদিকে উচ্চ ঝুঁকি সত্ত্বেও রাজধানীতে মদের অর্ধশত বারে অগ্নিনিরাপত্তার ছিটেফোঁটাও নেই। সাধারণ রেস্টুরেন্টের মতোই বারগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হচ্ছে রান্নাঘরে। আপৎকালীন জরুরি নির্গমন পথ নেই বেশিরভাগ বারে। এমনকি বারগুলোতে অ্যালকোহল মজুতের গুদামেও অগ্নিনিরাপত্তা অপর্যাপ্ত।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক এর আগে বলেন, বার লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে ফায়ার সেফটিসহ আরও বেশ কয়েকটি লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।

 এছাড়া ব্যবসা পরিচালনার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। বারগুলো যাতে নির্ধারিত সময় কঠোরভাবে মেনে চলে নারকোটিক্সের পক্ষ থেকে সেই তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। সূত্র জানায়, নারকোটিক্সের সরেজমিন পরিদর্শনে রাজধানীর নামিদামি কয়েকটি মদের বারে অগ্নি নিরাপত্তার করুণ চিত্র বেরিয়ে আসে। এমনকি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অ্যালকোহল মজুতের গুদামেও পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা নেই। অথচ সাধারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় মদের বারে অতিরিক্ত অগ্নি সতর্কতা নেওয়ার কথা।

সংশ্লিষ্টরা গণমাধ্যমকে বলছেন, বনানীর হোটেল সারিনা ও সুইড ড্রিম এবং খিলক্ষেতের রিজেন্সি হোটেলের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। হোটেল সারিনায় ১৭ এবং ১৯ তলায় পরিচালিত হচ্ছে বার। এছাড়া ৮ তলায় বার থাকায় সুইট ড্রিমে গ্রাহকদের ওঠানামার একমাত্র মাধ্যম লিফট। দুটি ভবনেই আপৎকালীন বহিগর্মন পথ বা জরুরি সিঁড়ি নেই। এর মধ্যে খিলক্ষেতের রিজেন্সি হোটেলের রুফটফ মদের বারসহ বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা সম্প্রতি উচ্ছেদ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

বারের অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চাইলে হোটেল সুইট ড্রিমের বার ইনচার্জ রিফাত মাহমুদ দাবি করেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে যথাযথ অগ্নিনিরাপত্তা রয়েছে। এছাড়া আরও বেশকিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন নতুন করে নেওয়া হচ্ছে। সারিনা হোটেলের বার ম্যানেজার কাওসার আহমেদ নাহিদও বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে বার থেকে নেমে যাওয়ার জন্য জরুরি নির্গমন পথ আছে। এছাড়া বারে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সামগ্রী মজুত রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজধানীতে মধ্য এবং উচ্চবিত্ত শ্রেণির গ্রাহকরাই মূলত বারে গিয়ে মদপান করেন। এছাড়া পাশ্চাত্য ধারার আদলে বারে পার্টি কালচার বাড়ছে। এখন অনেকেই বন্ধু বা সহকর্মীদের নিয়ে পানীয় সহযোগে দীর্ঘ সময় আড্ডা দেন। 

এছাড়া রাজধানীর বহুজাতিক ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের একটি অংশ নিয়মিত বারে যাতায়াত করেন। নারকোটিক্সের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, বিদ্যমান সামাজিক বাস্তবতায় মদ পান বাংলাদেশে এখনো নেতিবাচক কাজ হিসাবে বিবেচিত। এ কারণে বেশিরভাগ গ্রাহক গোপনে মদ পান করেন। ফলে অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি সেভাবে তাদের মাথায় আসে না। অথচ বারেই আগুনের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

আ. দৈ./ একে/ এস আর

আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৪১৪তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
মিডল্যান্ড ব্যাংক ও টালিখাতার উদ্যোগে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর জন্যে ডিজিটাল আর্থিক সেবায় নতুন সম্ভাবনা
মেঘনা ব্যাংকের ১৯৬তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৯৭তম সভা অনুষ্ঠিত
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক সিকিউরিটিজের ৪৯তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

কমার্স ব্যাংকের এমডি মোশারফ হোসেনকে অপসারণ
দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত ওমর ফারুক এমডি হতে মরিয়া
কুষ্টিয়ায় শিক্ষার্থী সাজিদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের পক্ষে ইবি উপাচার্য
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে সংসদ: সালাহউদ্দিন
জুলাই শুধু স্বৈরাচার মুক্তির নয়, পুনর্জন্মেরও মাস: প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয়- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝