বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের টঙ্গী পূর্ব থানার সদস্য সচিব আকাশ খানের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে টঙ্গী পূর্ব থানার সামনে কয়েকজন যুবক আকাশ খানকে জেরা করছেন কেন তিনি ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য সচিবের বাসায় গিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন এবং কেন সেখান থেকে ২৬ হাজার টাকা নিয়ে এসেছেন।প্রশ্নের জবাবে আকাশ খান বলেন আমি টাকা নি নাই আমার পাশের ছেলেরা নিয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওটি প্রকাশের পর গাজীপুরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জনসাধারণের মাঝে। পরবর্তীতে আজ শুক্রবার (৩০ মে) জুমার নামাজের পর ভুক্তভোগী পরিবার টঙ্গী পূর্ব থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে সেখানে উপস্থিত দেখতে পান বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের গাজীপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাম্মেল হোসেন, আকাশ ঘোষসহ সংগঠনের আরও কয়েকজন নেতা।
অভিযোগপত্র দেয়ার পর গণমাধ্যমকর্মীরা ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তারা জানান, মোজাম্মেল হোসেন তাদের হুমকি দিয়ে বলেন সাংবাদিক সহ সবাইকে দেখে নিব। এমনকি তিনি বলেছেন, “সেনাবাহিনী দিয়ে ধরে নিয়ে যাব।” পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে জানান।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মোজাম্মেল হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তিনি দম্ভভরে বলেন, “হ্যাঁ, আমি প্রশাসনের মাধ্যমে ধরিয়ে দেয়ার কথাই বলেছি। অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমার ব্যবহার এমনই।”
ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। একজন চাঁদাবাজের পক্ষ নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের নেতা মোজাম্মেল কেন এমন হুমকিমূলক আচরণ করছেন? এতে সন্দেহ দেখা দিয়েছে, আকাশ খানের সাথে মোজাম্মেল জড়িত আছে কিনা?
এই ঘটনার পর শুক্রবার বিকালে গাজীপুর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক নাবিল আল ওয়ালিদ সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গাজীপুরের সকল থানা কমিটি সাময়িক ভাবে স্থগিত করা হলো। কেউ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করলে গাজীপুর জেলা কমিটি দায়ী থাকবে না।
ভুক্তভোগী পরিবার থানায় আকাশ খানসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।”
আ. দৈ./কাশেম