ফ্যাসিস্ট আওয়ামী মদদপুস্ট জাকির হোসেনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিস্ট হয়ে পড়েছে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় সাধারন মানুষ। এলকাবাসীকে মারধর, পিস্তল দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন, জায়গা জমি দখল, চলাচলের জায়গা দখল, সরকারী খাস জায়গা দখল ও মাদক ব্যবসা জাকির হোসেন গংদের নিত্য নৈমিত্তিক কাজ। এসব করে অল্পদিনে বিপুল পরিমান অবৈধ বিত্ত বৈভমের মালিক হয়েছে জাকির।
অবশেষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ চত্বরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যারচেষ্টা মামলায় জাকির হোসেন এবং তার স্ত্রী বিউটি খাতুনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার (২৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
সর্বশেষ গত বুধবার (২১ মে) দিবাগত রাতের আধারে সন্ত্রাসী জাকিরের নেতৃৃত্বে হঠাৎ পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতভাবে ৫০ জন সন্ত্রাসী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) হামলা চালায়। হামলাকারীদেও মধ্যে রয়েছে, বিউটি খাতুন, আদর আক্তার, উদয় হাসান, হৃদয়, অন্তরা, ইমু, রানা, কামাল ও রতনসহ বাকিরাঅজ্ঞাত। সন্ত্রাসীদের হামলায় ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, সদস্য মশিউর রহমান, মাহবুব হাসান, দেলোয়ার মহিন, মফিজুল সাদিকসহ বেশ কয়েক জন সাংবাদিক আহত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বুধবার (২১ মে) রাতে হঠাৎ জাকির গং ডিআরইউ কার্যালয়ের সামনে থেকে চেয়ারম্যান টি স্টল নামে একটি দোকানের ৫০ হাজার টাকার মালামালসহ লুট করে নিয়ে যায়। দোকান লুটের বিষয়ে ডিআরইউ’র সিনিয়র সদস্য মশিউর রহমান জানতে চাইলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ওপর আক্রমণ চালানো হয়। এছাড়া ডিআরইউ’র সভাপতি আবু সালেহ আকনের উদ্দেশ্যে পিস্তল উচিয়ে গুলি করে এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকী দেয় জাকির হোসেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছে জাকির ও তার অনুসারীরা। তারা জোর করে মানুষের যায়গা দখল করেছে। সেগুনবাগিচায় মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় সীমাহীন কস্ট ভোগ করতে হচ্ছে। তারা জানান, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের এমপি আফজাল হোসেন জাকিরের বেয়াই। সে প্রায়ই জাকিরের বাড়িতে আসা যাওয়া করে। জাকির এমপি আফজালের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
গত ৫ অগাস্টের পর দীর্ঘ দিন আফজাল জাকিরের বাসায় আত্নগোপনে ছিলো। আওয়ামী লীসের সাবেক এমপি আফজালের ১০ টি লাগেজ এখনো জাকিরের বাসায় রয়েছে। এর মধ্যে বিগত সরকারের গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র রয়েছে। এছাড়া জাকিরের বড় মেয়ে আদরের জামাতা র্যাবের বিকাশ ছাব্বির। তিনি র্যাবের সাবেক ডিজি বেনজির আহমেদের অন্যতম সহযোগী। গত ৫ অগাস্টের পর র্যাবের বিকাশ ছাব্বিরও কৌশলে দেশত্যাগ করে। যাওয়ার সময় সে ১০ কোটি টাকা, একটি গাড়ি ও গুলশানের ফ্লাট জাকিরের বড় মেয়েকে দিয়ে গেছে। সন্ত্রাসী জাকির আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে সেগুন বাগিচায় ২টি বাড়ি দখল করেছে। তার দখলকৃত জায়গায় নিয়মতি মাদক ব্যবসা হয়।
ডিআরইউতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা: সন্ত্রাসী জাকির দম্পতি কারাগারে :
অবশেষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ চত্বরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যারচেষ্টা মামলায় জাকির হোসেন এবং তার স্ত্রী বিউটি খাতুনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার (২৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
এদিন সন্ত্রাসী জাকির হোসেন এবং তার স্ত্রী বিউটি খাতুনকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক খালেক মিয়া। তিনি আসামিাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান,পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সেগুনবাগিচা এলাকার বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী জাকির হোসেন ও তার অনুসারীরা সেগুন বাগিচা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, তাদের জায়গা জমি দখল ও চলাচলের রাস্তা দখল করেছে এবং সরকারি জায়গা দখল করেছে জাকির। এছাড়া জাকিরের পরিবারের সদস্যরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলেও অনেক অভিযোগ আছে। জাকির হোসেন গং আমার ও ডিআরইউ সদস্যদের উপর পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, সন্ত্রাসী জাকির হোসেন গং এর অত্যাচারে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত চৌধুরী আলমের গুম হওয়ার নেপথ্যের বিষয়টি ভালোভাবে তন্তদন্ত করা। কারণ জাকির হোসেন নিয়ন্ত্রিত যে বস্তি রয়েছে এইখানে চৌধুরী আলমের লোকজনও এখানে আড্ডা দিতো। জাকির হোসেনের সঙ্গে চৌধুরী আলমের জায়গার দ্বন্দ্ব রয়েছে। জাকির হোসেনের মাদক ব্যবসা তার অস্ত্র ব্যবহারসহ সকল অপকর্ম খতিয়ে দেখে দ্রুত মামলার চার্জশিট দেয়া দরকার। জাকির হোসেনের সম্পত্তির খোঁজখবর নেয়া এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য উদঘাটন করে আইনের সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
আ. দৈ./কাশেম