বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ’র প্রধান এফএম শাহীনুল ইসলাম। তিনি এ পদে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে বসে দেদারসে তদবির বাণিজ্য শুরু করছেন।
সূত্র বলছে, তদবির বাণিজ্য তিনি একাই নিয়ন্ত্রণ করেন। এ জন্য রয়েছে তার একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ নম্বারও।
জানা যায়, বিএফআইইউ’র প্রধান এফএম শাহীনুল ইসলাম বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের পর থেকে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে। বহিরাগতদের আনাগোনা মূল কারণ হলো তিনি ব্যাংকে চাকরি ও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বদলি এবং দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা উত্তোলনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে তদরিব করে থাকেন। এর মাধ্যমে তিনি বড় একটা অবৈধ কমিশন হাতিয়ে নেন। যা তিনি সরাসরি করে থাকেন। তাই তার কাছে বহিরাগতদের আনাগোনা বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, তার কাজ রেখে বহিরাগতের নিয়ে বেশি সময় ব্যস্ত থাকেন। গত ৯ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তাকে নিয়োগ দেন। সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ, সন্ত্রাসের অর্থায়ন প্রতিরোধ এবং গণধ্বংসের অস্ত্র বিস্তার প্রতিরোধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু নিয়োগের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কাজের প্রতি মনোযোগ না দিয়ে, আছেন শুধু তদবির বাণিজ্য নিয়ে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে তাকে নিয়ে ব্যাপক সমলোচনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। অনেকই বলছেন, এখানে বসে তিনি মূলত আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজদের বাঁচানোর জন্য কাজ করছেন । তিনি একবার জিয়ার সৈনিক আবার কখনো আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচয় দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, অর্থের লেনদেনের মাধ্যমে সকল ধরনের তদবির করেন তিনি। নগদ টাকা পেলেই তিনি তদবির শুরু করে দেন। তার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এই কর্মকর্তা আরো জানান, তার একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার রয়েছে। যা তার মোবাইল চেক করলেই পাওয়া যাবে। আমরা যেখানে সুশাসন ফিরাতে কাজ করছি। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকেরই দুর্নীতিগ্রস্থ লোক ঢুকে বসে আছে। তাহলে আর্থিকখাতে সুশাসন ফিরবে কিভাবে ? তাই এধরনের দুর্নীতিরবাজদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখা সরকারের জন্য চরম আত্মঘাতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে (প্রতি ডলারের দাম ১২০ টাকা) এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল, আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা যে পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে। সেই অর্থ উদ্ধারে তার কোনো উদ্যোগই নেই। এইগুরুত্বপূর্ণ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা তদরিব বাণিজ্য নিয়ে তৎপর থাকলে পরিস্থিতি দাঁড়াবে আরও ভয়াবহ।
তার এসব র্কর্মকাণ্ড নিয়ে অধস্তন কর্মকর্তারা কিছুই বলতে পারছেন না। তারা জানান শাহীনুলের খুঁটির জোর আছে। তিনি সব ম্যানেজ করে চলেন। এ সব বিষয়ে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
র/আ